প্রতীকী ছবি।
সড়কে দুর্ঘটনা ও মৃত্যু রুখতে রাজ্য সরকারের তরফে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ স্লোগানের পাশাপাশি নানা পদক্ষেপ করা হয়েছে। বেপরোয়া গাড়ি চালানো রুখতে সড়কে ‘স্পিড লেসার গান’ ব্যবহার করে গতি মাপার ব্যবস্থা হয়েছে। মদ্যপ চালকদের ধরতে ‘ব্রিদিং অ্যানালাইজার’ পরীক্ষা ব্যবস্থাও চালু রয়েছে। দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকায় নজরদারিতে রয়েছে সিসি ক্যামেরা। কিন্তু এতসবের পরেও জাতীয় সড়ক যান চলাচল কতটা নিরাপদ সেই প্রশ্ন উঠেছে।
আর যে কারণে এই প্রশ্ন তা হল, কয়েক মাসের ব্যবাধানে রাজ্যের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীর একই ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হওয়া। বুধবার তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দুবাবু দলের কাজ সেরে হলদিয়া থেকে ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে ফিরছিলেন। রাত ১১টা নাগাদ ভবানীপুর থানার কাছে পিছন থেকে একটি লরি সাংসদের গাড়িতে ধাক্কা মারে বলে অভিযোগ। দিব্যেন্দুবাবুর ডান হাতে আঘাত লেগেছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর অবশ্য তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশ ওই লরির চালক ও খালাসিকে গ্রেফতার করেছে। এর আগে গত ২৯ এপ্রিল রাতে হলদিয়া থেকে বাড়ি ফেরার পথে চণ্ডীপুর বাজারের কাছে নন্দকুমার থেকে দিঘাগামী জাতীয় সড়কে দিব্যেন্দুবাবুর গাড়িতে একটি লরি ধাক্কা মেরেছিল। অল্পের জন্য রক্ষা পান সাংসদ।
বার বার দুর্ঘটনায় জাতীয় সড়কে নিরাপদে যান চলাচল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাংসদও। তিনি জানান, জাতীয় সড়কে কিছু যানচালক যে বেপরোয়া তার প্রমাণ তিনি নিজেই। সে ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সম্প্রতি হলদিয়া থেকে ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে ফেরার পথে ব্রজলালচকের কাছে অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীর ছোড়া ইট পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর গাড়ির কাচে লাগে। এ ছাড়াও কিছুদিন আগে উত্তর ২৪ পরগনার হাবরা থেকে ফেরার পথে কয়েকজন ধান ব্যবসায়ীর গাড়ি আটকে টাকা লুঠ করে দুষ্কৃতীরা। যদিও ঘটনার দিন দুয়েকের মধ্যে পুলিশ পাঁচ দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার ও লুঠের অর্ধেক টাকা উদ্ধার করে।
পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ার অবশ্য দাবি, ‘‘বুধবার রাতে সাংসদের গাড়িতে লরির ধাক্কা দুর্ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে লরি চালকের গাফিলতি নিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। লরিচালক ও খালাসিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ জানতে বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
খোদ সাংসদের গাড়ি বার বার একই দুর্ঘটনায় পড়ায় জাতীয় সড়কে পুলিশের টহলদারির অভাব নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। জেলা পুলিশ সুপারের বক্তব্য, বেপরোয়া গাড়ি চালনা রুখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ করায় পরিস্থিতির আগের চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে। রাতে সব সড়কে নিরাপত্তার জন্য পুলিশের টহলদারিও বাড়ানো হয়েছে।