বন্ধ রেলগেটে ঝুঁকির পারাপার

ট্রেন আসবে। রেলগেট তাই পড়ে রয়েছে। আটকে পড়েছে একের পর এক মোটরবাইক, গাড়ি, লরি। কিন্তু সাইকেল আরোহী আর পথচারীদের লাইন টপকে যাতায়াতে বিরাম নেই। একাংশ বাইক আরোহীও রেলগেটের নীচ দিয়ে লাইন পারাপার করছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৭ ০১:১৪
Share:

অবাধে: গিরিময়দান স্টেশনের কাছে বন্ধ রেলগেট পেরনোর দৃশ্য দেখা যায় রোজই। নিজস্ব চিত্র

ট্রেন আসবে। রেলগেট তাই পড়ে রয়েছে। আটকে পড়েছে একের পর এক মোটরবাইক, গাড়ি, লরি। কিন্তু সাইকেল আরোহী আর পথচারীদের লাইন টপকে যাতায়াতে বিরাম নেই। একাংশ বাইক আরোহীও রেলগেটের নীচ দিয়ে লাইন পারাপার করছেন।

Advertisement

কেন ঝুঁকি নিয়ে লাইন পেরোচ্ছেন? সুমন বিশ্বাস নামে বাইক আরোহী এক যুবকের জবাব, “রোজ যদি বন্ধ রেলগেটে আটকে যাই, জীবনের কত সময় নষ্ট হয়ে যাবে বলুন তো!”

রেলশহর খড়্গপুর জুড়েই চলছে এই ঝুঁকির পারপার। বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। গত ফেব্রুয়ারিতে রাজগ্রাম রেলগেটে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে এক যুবকের। তাতেও হুঁশ ফিরছে না। গ্রামীণ এলাকায় অধিকাংশ প্রহরী বিহীন রেলগেটে দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু ডিভিশনের সদর দফতর যেখানে। সেই খড়্গপুর শহরে স্বয়ংক্রিয় রেলগেট থাকা সত্ত্বেও কেন এই প্রবণতা, সেই প্রশ্ন উঠছে। ধরপাকড়ের অভাবেই বেআইনি এই প্রবণতা বাড়ছে বলে মনে করছেন শহরবাসী। রেলের বক্তব্য, সচেতনতা শিবির হয়। যদিও শহরবাসীর দাবি, তা নজরে পড়ে না।

Advertisement

খড়্গপুর রেল ডিভিশনে এক্সপ্রেস, প্যাসেঞ্জার, মেমু মিলিয়ে দিনে প্রায় ১৫৭ জোড়া যাত্রিবাহী ট্রেন চলাচল করে। এই ডিভিশনে মোট ৪৪০টি রেলগেট রয়েছে। এক সময়ে আইআইটি সংলগ্ন পুরীগেটের রেল ক্রসিংয়ে দীর্ঘ প্রতীক্ষার মাঝে অনেকেই বন্ধ রেলগেট পারাপার করতেন। বছর চারেক আগে সেখানে চালু হয়েছে উড়ালপুল। তবে শহরের প্রাণকেন্দ্র খরিদা, গিরিময়দানে উড়ালপুল না থাকায় যানজট রোজকার ছবি। আর সেখানেই বন্ধ রেলগেটে চলছে ঝুঁকির পারাপার। গিরিময়দানে রেলগেটে দাঁড়িয়ে থাকা খড়্গপুর গ্রামীণের কপোতিয়ার বাসিন্দা শেখ নজরুল বলছিলেন, “কয়েক দিন আগেই আমাদের এলাকায় প্রহরী বিহীন রেলগেট পেরোতে গিয়ে অটোতে ট্রেনের ধাক্কায় অনেকে মারা গিয়েছিল। তবু মানুষ ঝুঁকি নিচ্ছেন। আর রেল উদাসীন।”

নিয়ম অনুযায়ী, বন্ধ রেলগেট পারাপার করা দণ্ডনীয়। এ ক্ষেত্রে জরিমানা, এমনকী কারাদণ্ডও হতে পারে। এই সংক্রান্ত বিধি-নিষেধের বোর্ড রেলগেটের সামনে লাগিয়ে রাখার কথা। কিন্তু শহরের অধিকাংশ রেলগেটে এই বোর্ডের দেখা মেলে না। আবার কোথাও বোর্ড থাকলেও লেখা অস্পষ্ট। খড়্গপুরের বাসিন্দা বেসরকারি সংস্থার কর্মী সম্রাট মুখোপাধ্যায় বলেন, “খরিদা ও গিরিময়দান রেলগেটে তো নিয়মিত বন্ধ রেলগেটে পারাপার দেখি। ট্রেন চলে এলেও শেষ মুহূর্তে অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করেন। কখনও ধরপাকড় করতে দেখিনি।”

এ প্রসঙ্গে খড়্গপুরের এডিআরএম মনোরঞ্জন প্রধানের বক্তব্য, “আমাদের পক্ষ থেকে সচেতনতা প্রচার চলে। রেল সুরক্ষা বাহিনী ধরপাকড়ও করে। তাও মানুষ যদি সচেতন না হয় কী করা যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন