জালিয়াতির সূত্র উত্তরপ্রদেশে, রেল উদাসীনই

ওই দলের সদস্য আরপিএফের এক সাব-ইন্সপেক্টর বলেন, “আমরা তদন্তে জানতে পেরেছি উত্তরপ্রদেশ থেকে এই সফটওয়্যারের চক্র চালানো হচ্ছে। কিন্তু আমরা উত্তরপ্রদেশে হানা দিতে পারছি না। কারন আমরা তো আর নিজে থেকে উঁচু মহলে এর অনুমতি চাইতে পারি না। উঁচু মহল থেকে যদি অনুমতি পাই তবে উত্তরপ্রদেশ যাব।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৬:১৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

তৎকাল টিকিটের কালোবাজারির তদন্তে নেমে হ্যাকিং সফটওয়্যার রেড মির্চির নাম জানতে পারে রেলের অপরাধদমন শাখা। জানা যায়, শুধু খড়্গপুর রেল ডিভিশন নয়, এই সফটওয়্যারের জাল ছড়িয়ে রয়েছে দেশ জুড়ে। গোটা কারবার উত্তরপ্রদেশ থেকে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে বলেও দাবি রেলের। যদিও রেলের শীর্ষ মহলের নির্দেশ না মেলায় ভিন্‌ রাজ্যে অভিযানে না গিয়ে অপরাধদমন শাখার দলটিকে হাত গুটিয়েই থাকতে হচ্ছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিয়ম অনুযায়ী, ভিন্‌ রাজ্যে ও অন্য ডিভিশনে অভিযান চালাতে রেলের ঊর্ধ্বতন মহলের অনুমতি প্রয়োজন। কিন্তু সেই অনুমতির জন্য নিচু মহল থেকে যেচে কোনও আবেদন করা যায় না। রেল সূত্রে খবর, এই কারণেই রেড মির্চির রমরমা ঠেকাতে তদন্তে ধাক্কা খেতে হচ্ছে রেলের অপরাধদমন শাখার খড়্গপুরের দলটিকে। তাই আপাতত তাঁরা বিভিন্ন এলাকায় এজেন্টদের পাকড়াও করতেই উঠেপড়ে লেগেছে। ইতিমধ্যেই প্রায় এক ডজন মামলা রুজু করে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে দলটি। ‘রেড মির্চি’ সফটওয়্যার ব্যবহার করে কাটা বিপুল সংখ্যক তৎকাল টিকিটও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এমনকী খড়্গপুর আইআইটি চত্বরে থাকা বিভিন্ন এজেন্সির ওপরও নজরদারি চালাচ্ছে অপরাধদমন শাখার দলটি।

ওই দলের সদস্য আরপিএফের এক সাব-ইন্সপেক্টর বলেন, “আমরা তদন্তে জানতে পেরেছি উত্তরপ্রদেশ থেকে এই সফটওয়্যারের চক্র চালানো হচ্ছে। কিন্তু আমরা উত্তরপ্রদেশে হানা দিতে পারছি না। কারন আমরা তো আর নিজে থেকে উঁচু মহলে এর অনুমতি চাইতে পারি না। উঁচু মহল থেকে যদি অনুমতি পাই তবে উত্তরপ্রদেশ যাব।”

Advertisement

আইআরসিটিসি-র একাধিক ব্যক্তিগত ইউজার আইডি-র মাধ্যমে একের পর এক তৎকাল টিকিট বুক হয়ে যাওয়ায় সন্দেহ হয় রেল কর্তৃপক্ষের। তদন্তে নেমে রেলের অপরাধদমন শাখা জানতে পারে, রেলের টিকিট এজেন্ট ও অন্য এজেন্টরা হ্যাকিং সফটওয়্যার ‘রেড মির্চি’র সাহায্যে আগে থেকেই তৎকাল টিকিটের ফর্ম পূরণ করে রাখছেন। টিকিট কাটার নির্দিষ্ট সময় চালু হওয়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বুক হয়ে যাচ্ছে একাধিক তৎকাল টিকিট। অপরাধদমন শাখার আধিকারিকদের একাংশের দাবি, হাজার হাজার এমন এজেন্ট রয়েছে যাঁরা গোপনে এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে তৎকাল টিকিটের জালিয়াতি করছে। এ ক্ষেত্রে এই বেআইনি সফটওয়্যার বন্ধ করাই জালিয়াতি রোখার একমাত্র পথ বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও রেল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে এখনও উদাসীন বলে অভিযোগ। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “‘রেড মির্চি’ সফটওয়্যার তো শুধু এই জোনে নয়, দেশ জুড়েই চলছে। এই সফটওয়্যার যেহেতু আইআরসিটিসি-র ওয়েবসাইটে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে কাজ করছে তাই এই বিষয়টি আইআরসিটিসি দেখবে।’’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘রেলের পক্ষ থেকে মূলত টিকিটের কালোবাজারি রোখার জন্য অভিযান চালাচ্ছি। যাত্রীদেরও সচেতন করছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন