রেলকর্মীরা আন্দোলনে, বৈঠক আজ

বরখাস্ত রেলকর্মীদের কাজে ফেরানোর দাবিতে আন্দোলনে নামা ‘ফোরাম’ ভাঙতে চাইছেন আধিকারিকেরা— সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে এমন অভিযোগই করলেন আন্দোলনে সামিল রেলকর্মীরা। তবে খড়্গপুরে রেল কারখানার ‘জয়েন্ট ফোরামে’র সদস্যরা আন্দোলনে অনড়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৭ ০২:২৭
Share:

বরখাস্ত রেলকর্মীদের কাজে ফেরানোর দাবিতে আন্দোলনে নামা ‘ফোরাম’ ভাঙতে চাইছেন আধিকারিকেরা— সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে এমন অভিযোগই করলেন আন্দোলনে সামিল রেলকর্মীরা। তবে খড়্গপুরে রেল কারখানার ‘জয়েন্ট ফোরামে’র সদস্যরা আন্দোলনে অনড়। আলোচনার মাধ্যমেই তাঁরা দাবি আদায়ের চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানানো হয়েছে।

Advertisement

রবিবার পর্যন্ত কর্মবিরতি চলেছে খড়্গপুর রেল কারখানার ডিজেল শপে। সোমবার ছিল ছুটি। আজ, মঙ্গলবার কারখানা খোলার পরে বেলা সাড়ে ১২টায় চিফ ওয়ার্কস ম্যানেজারের (সিডব্লিউএম) সঙ্গে দেখা করবেন ফোরামের প্রতিনিধিরা। তিনটি দাবি নিয়ে দরবার করা হবে— ১) বরখাস্ত তিন কর্মীকে কাজে পুনর্বহাল। ২) ভবিষ্যতে যাতে কোনও কর্মীর বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। ৩) কর্মবিরতির জেরে স্থগিত থাকা কাজ কর্মীরা বিনা পারিশ্রমিকে অতিরিক্ত সময়ে করে দেবেন। তা পূরণ না হলে মঙ্গলবার বিকেলে আলোচনায় বসে বৃহত্তর আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করা হবে বলে ফোরামের তরফে জানানো হয়েছে। ফোরামের আহ্বায়ক কে কৃষ্ণা রাও এ দিন বলেন, “এ ভাবে আন্দোলনের জন্য তিন কর্মীকে বরখাস্ত করার বিষয়টি রেল কারখানার ইতিহাসে নজিরবিহীন। আমরা তাই ওই কর্মীদের পুনর্বহাল করে ষড়যন্ত্রকারী ডেপুটি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারকে কারখানার বাইরে বের করার দাবি জানাচ্ছি।”

গত শুক্রবার খড়্গপুর রেল কারখানার ডিজেল শপের তিন কর্মীকে চাকরি থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধাম্ত জানান কর্তৃপক্ষ। ক্যান্টিন নিয়ে আন্দোলনে ওই তিনজন পুরোভাগে ছিলেন। এবং আন্দোলনের নামে তাঁরা রেলসুরক্ষা বাহিনীর কর্মীদের মারধর করেছিলেন বলে অভিযোগ। কিন্তু তার জেরে দক্ষিণ পূর্ব রেলের এই কারখানায় তিন কর্মীকে চাকরি থেকে বসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নজিরবিহীন। তার প্রতিবাদেই আন্দোলনে নেমেছেন ডিজেল শপের কর্মীরা। শনিবার কোনও কর্মী সংগঠনের ব্যানার ছাড়াই শুরু হয়েছে কর্মবিরতি। শনিবার রাতে গড়ে তোলা হয় সর্বদলীয় কর্মী সংগঠনের ‘জয়েন্ট ফোরাম’। তবে রবিবার ফোরাম থেকে সমর্থন তুলে নেয় মেনস্‌ কংগ্রেস। এ দিনও ফোরামের সাংবাদিক বৈঠকে মেনস্‌ কংগ্রেসের কোনও নেতা ছিলেন না। তবে কারখানায় মেনস কংগ্রেসের প্রাক্তন নেতা দামোদর রাওকে বৈঠকে দেখা গিয়েছে। তিনি বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে এই জয়েন্ট ফোরামে আছি। আমরা চাই ওই তিন কর্মীকে চাকরিতে পুনর্বহাল করা হোক। ডিজেল শপের কর্মীদের সঙ্গে কারখানা কর্তৃপক্ষের মধ্যস্থতাকারী হিসাবে ফোরাম কাজ করবে।”

Advertisement

জয়েন্ট ফোরামে সামিল রেলের মেনস্‌ তৃণমূলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সিডব্লিউএমের দেখা করতে না চাওয়ার বিষয়টিরও সমালোচনা করা হয় এ দিন। মেনস্‌ ইউনিয়নের নেতা অজিত ঘোষাল বলেন, “রেল আধিকারিকেরা আমাদের এই ফোরামকে ভাঙতে চাইছেন। তাই ঠিক করেছি মেনস্‌ তৃণমূল ছাড়াই জয়েন্ট ফোরামের প্রতিনিধিরা বৈঠকে যাবেন।” মেনস্‌ তৃণমূলের নেতা তপন সেনগুপ্তেরও বক্তব্য, “আমাদের সংগঠনের অনুমোদন থাকলেও রেলের স্বীকৃতি নেই। কিন্তু জয়েন্ট ফোরামের মাধ্যমে আমরা দেখা করতে না দেওয়ার বিষয়টি অগণতান্ত্রিক। তাও তিন কর্মীকে কাজে ফেরানোর জন্য কারখানায় না ঢুকলেও ফোরামের সঙ্গে থাকব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন