ঝুঁকি নিয়েই যাত্রা। কেশপুর-চন্দ্রকোনা রাস্তার ইছাইপুরে চাতালে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
টানা বৃষ্টির পরে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে মঙ্গলবার। সকাল থেকে আকাশের মুখ ভার থাকলেও এ দিন তেমন বৃষ্টি হয়নি। ফলে, জলবন্দি খড়্গপুর শহরের অবস্থা তুলনায় ভাল। তবে গ্রামীণ এলাকায় এখনও জল জমে রয়েছে।
গত শুক্রবার থেকে নাগাড়ে বৃষ্টিতে খড়্গপুর শহরের ২, ২৫, ২৬, ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বাকি জায়গায় জল নামলেও ২৫ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা এখনও ডুবে রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুর-উদ্যোগও নজরে পড়ছে না। জল নামার পরে স্থানীয়রাই আবর্জনা পরিষ্কারের ব্যবস্থা করেছেন। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের শ্মশানকালী মন্দিরের রাস্তা, বুলবুলচটি, ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইন্দার আনন্দনগরে জলে ভেসে আসা আবর্জনা থেকে ছড়াচ্ছে দূষণ। বাড়ছে মশার উপদ্রব। বুলবুলচটির বাসিন্দা শুভঙ্কর দোলুই, শ্মশানকালী মন্দির এলাকার বাসিন্দা মদনকুমার নাগ বলেন, “পুরসভা কিছুই করছে না। সামান্য ব্লিচিং ছড়ানো, আবর্জনা সাফাইও হচ্ছে না।”
ইন্দার আনন্দনগরে একই ক্ষোভ। জমা জল পুরোপুরি নামেনি। তারই মধ্যে ছড়াচ্ছে দূষণ। স্থানীয় বাসিন্দা জহর চৌধুরী বলেন, “আমরা নিজেরাই আবর্জনা সাফাই করেছি। পুরপ্রধান নিজে এসে বলেছিলেন, এলাকা পরিচ্ছন্ন করার ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু কোথায় কী!” শহরের যখন এই অবস্থা তখন মঙ্গলবার সারাদিন দেখা মেলেনি খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারের। তিনি এ দিন পুরসভায় যাননি। বারবার চেষ্টা করেও মোবাইলে যোগাযোগ করা যায়নি তাঁর সঙ্গে। ফোন বেজে গিয়েছে।
খড়্গপুর গ্রামীণের মীরপুরের পরিস্থিতিও আগের তুলনায় ভাল। জল নামতে শুরু করায় ত্রাণ শিবির থেকে লোকজন বাড়ি ফিরছেন। কাঁসাইয়ের খালে আবর্জনা জমেই এখানে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। প্রশাসন মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে খালের আবর্জনা তুলে ফেলায় নিচু এলাকার জল বেরিয়ে গিয়েছে।
তবে তুলনায় উঁচু এলাকার বিভিন্ন জমিতে এখনও জল রয়েছে। অনেকের বাড়ির চারদিকও জলমগ্ন। মীরপুরের বাসিন্দা বাবু শিট বলছিলেন, “মঙ্গলবার সকালে বাড়ি ফিরে ঘর মেরামত করেছি। চারপাশে জল। মাটি কেটে জমা জল বের করার কোনও উদ্যোগ তো দেখছি না।’’ সকলে ত্রাণ না পাওয়ায় এলাকায় ক্ষোভ রয়েছে। খড়্গপুরের মহকুমাশাসক সুদীপ সরকার অবশ্য বলেন, “পর্যাপ্ত ত্রিপল গ্রামীণ ও পুর-এলাকায় দেওয়া হয়েছে। আর পুরসভা ও স্থানীয় পঞ্চায়েত জমা জল ও দূষণ মোকাবিলায় কাজ করছে।”