গৃহহারা: ভাঙা বাড়িতে শুকদেব। নিজস্ব চিত্র
সকাল থেকে বাড়িতেই ছিলেন শুকদেব মাইতি আর তাঁর ঠাকুমা শেফালিদেবী। বিকেলে হঠাৎ টালির ছাউনিতে কড়কড় শব্দ হতেই বাইরে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। তার পর চোখের সামনে দেখেন, টালির ছাউনি-সহ গোটা বাড়িটাই ভেঙে পড়ল। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে মেদিনীপুর পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিদ্যাসাগরপল্লিতে। ঠাকুমা ও নাতি অবশ্য অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন। তবে ভারী বর্ষার আগে এমন ঘটনায় চিন্তিত এলাকার বাসিন্দারা।
বাড়ি ভেঙে পড়ার পরে মা এবং ঠাকুমাকে নিয়ে শহরের সঙ্গতবাজার এলাকায় এক পরিচিতের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন মেদিনীপুর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শুকদেব। তাঁর কথায়, “বাড়ির অবস্থা খুবই খারাপ। বছর তিনেক আগে পুরসভা ‘হাউস ফর অল’ প্রকল্পে নাম লিখে নিয়ে গেলেও কাজ কিছুই হয়নি।” যত দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ করার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ জানান তিনি।
একই অভিযোগ ওই ওয়ার্ডের শেখ সইদুল, শেখ আখতারদেরও। তাঁদের বক্তব্য, অনেক গরিব মানুষ বাড়ির জন্য টাকা পাননি। অথচ সম্পন্নরা পেয়েছেন। স্থানীয় ট্রলি ভ্যান চালক জামির মল্লিক বলেন, “টালির উপর ত্রিপল দিয়ে রয়েছি। একটু বৃষ্টি হলেই জল পড়ে। আবেদন করেও ঘর পাইনি।” ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কৌস্তুভ বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু দিন আগে মারা গিয়েছেন। নতুন করে আর নির্বাচন হয়নি। পুরপ্রধান প্রণব বসুই ওয়ার্ডের যাবতীয় কাজকর্ম সামলান। এ দিন তিনি ফোন ধরেননি। আর উপ-পুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাসের দাবি, “অভিযোগ ভিত্তিহীন। ‘হাউস ফর অল’ প্রকল্পে যাঁরা ফর্ম পূরণ করেছেন, তাঁরাই বাড়ি তৈরির টাকা পাচ্ছেন।” পুরসভার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এলাকাবাসীর জন্য মোট ন’হাজার ফর্ম জমা পড়েছে এবং প্রায় ১২০০ বাড়ি তৈরির টাকা এসেছে। যাঁরা ফর্ম জমা দিয়েছেন, ধীরে ধীরে সকলের বাড়ি তৈরির টাকা আসবে বলেই জানিয়েছে পুরসভা।