পাথরায় আটকে সংরক্ষণ

জমি জটে পাথরায় থমকে পুরাতত্ত্ব সংরক্ষণের কাজ। জট কাটাতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পাথরার বাসিন্দারা। পাথরা পুরাতত্ত্ব সংরক্ষণ কমিটির সম্পাদক ইয়াসিন পাঠান বলেন, “দ্রুত জমি জট কাটিয়ে সংরক্ষণ ও উন্নয়নের কাজ শুরু হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:১২
Share:

অবহেলায় জীর্ণ মন্দির। ফাইল চিত্র।

জমি জটে পাথরায় থমকে পুরাতত্ত্ব সংরক্ষণের কাজ। জট কাটাতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পাথরার বাসিন্দারা। পাথরা পুরাতত্ত্ব সংরক্ষণ কমিটির সম্পাদক ইয়াসিন পাঠান বলেন, “দ্রুত জমি জট কাটিয়ে সংরক্ষণ ও উন্নয়নের কাজ শুরু হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাও কাজ না এগোনোয় ফের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

Advertisement

মেদিনীপুর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে পাথরার প্রাচীন মন্দিরের টেরাকোটার কাজ অনবদ্য। পাথরার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে ইয়াসিন পাঠানের নাম। ইয়াসিন পাঠানের অনেক লড়াইয়ের পর পাথরার মন্দির স্বীকৃতি পায়। ২০০৩ সালে পাথরায় কংসাবতী নদীর তীরে অবস্থিত ৩৪টি মন্দির ও মন্দির সংলগ্ন ২৫ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করে ‘আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া’ (এএসআই)। পরে ১৯টি মন্দিরে সংস্কার কাজ হয়।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সব মন্দির সংস্কারের পাশাপাশি পর্যটকদের থাকার জন্য আবাসন, জলাধার, বোটিংয়ের ব্যবস্থা, বাগান, আলোর ব্যবস্থা করা-সহ নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়। মাপজোক করে দেখা যায়, পর্যটনের পরিকাঠামো গড়তে ৯ একর ৯৭৫ ডেসিমেল জমি দরকার। জমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়নের জন্য ২০১০ সালে পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ দফতর ৪ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দও করে। যদিও কাজ বলতে ওইটুকুই। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর জমি চিহ্নিত ও মূল্য নির্ধারণ করে পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগকে জানিয়েছে । জমি কিনে তা হস্তান্তর করা হয়নি।

Advertisement

প্রকল্পের জন্য জমি দিতে রাজি স্থানীয়রা। পাথরার কৃষক আশুতোষ মজুমদার, মনোহরকান্তি মজুমদাররা বলেন, “জমি দিতে রাজি আছি বলে লিখিতভাবে প্রশাসনকে জানিয়েছি। তা সত্ত্বেও কেন কাজ হচ্ছে না, বুঝতে পারছি না।” স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, মন্দির সংলগ্ন যে সব জমি রয়েছে, তার বেশিরভাগ জমিতেই ভাল চাষ হয় না। স্থানীয় বাসিন্দা পরেশ দোলুইয়েরও প্রশ্ন, “উপযুক্ত দাম পেলে, কাজ পেলে জমি দেব না কেন? প্রশাসন উদ্যোগী না হলে কাকে জমি বেচব!”

এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পর্যটন শিল্পের বিকাশ হলে এলাকারই অর্থনৈতিক উন্নতি হবে। শুধুমাত্র প্রশাসনিক উদাসীনতার কারণেই প্রকল্পের কাজ বছরের পর বছর আটকে থাকছে। পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ আধিকারিক (কলকাতা চক্র) সুশান্ত মাইতিও বলছেন, “জমির কারণে সমস্যা হচ্ছে। সমস্যা মেটাতে আমাদের একটি দল নবান্নে যাবে। দ্রুত সমস্যা মিটিয়ে কাজ শুরুর চেষ্টা করছি।”প্রশাসন পদক্ষেপ করছে না কেন? পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) আর অর্জুন বলেন, “চাষিদের জমি দেওয়ার সম্মতির বিষয়টি রাজ্যকে জানাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন