কোথাও প্রযুক্তির অভাব, আবার কোথাও আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই। আর তাতেই হোঁচট খাচ্ছে ছোট থেকে ভারী শিল্প সংস্থাগুলি।
সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হল দেশের ভারী শিল্প মন্ত্রক। খড়্গপুর আইআইটি ও শিল্প সংস্থাগুলির যৌথ উদ্যোগে শিল্পোৎপাদনের ক্ষেত্রে উন্নতমানের গবেষণাকেন্দ্র গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার খড়্গপুরে কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের সঙ্গে আইআইটির অধিকর্তা পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত হয়েছে, মূলত পূর্ব ভারতের ঝিমিয়ে পড়া শিল্পগুলিকে চাঙ্গা করতেই কাজ করবে এই গবেষণা কেন্দ্র। তবে প্রয়োজনে দেশের অন্য প্রান্তের শিল্প সংস্থাও প্রযুক্তিগত
সহযোগিতা পাবে।
মন্ত্রী বাবুল পরে বলেন, “বৈঠকে অনেক ছোট ও মাঝারি সংস্থা ছিল। অনেক সময় এই সংস্থাগুলি অনেক কাজের বরাত পায়। কিন্তু প্রযুক্তি ও আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাবে পিছিয়ে পড়ে। আমরা আইআইটির হাত ধরে যে কেন্দ্র গড়তে চলেছি তাতে এই ধরনের শিল্প সংস্থাগুলি উপকৃত হবে।” আর খড়্গপুর আইআইটির অধিকর্তা পার্থপ্রতিম চক্রবর্তীর বক্তব্য, “পশ্চিমবঙ্গে শিল্পের প্রগতির জন্য আমরা ‘সেন্টার অফ এক্সিলেন্স’ গড়ে তুলব। এই কেন্দ্রে বর্তমান ও ভবিষ্যতের প্রয়োজনীয়তার নিরিখে গবেষণা হবে। এর ফলে আমাদের শিল্প সংস্থাগুলি ভারতবর্ষে বসে বিশ্বমানের জিনিস তৈরি করতে পারবে।”
আইআইটি সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প মন্ত্রক এই কেন্দ্র গড়ে তোলার ৮০ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করবে। আর বিভিন্ন শিল্প সংস্থার পক্ষ থেকে বাকি ২০ শতাংশ টাকা দেওয়া হবে। এ দিনের বৈঠকে বিভিন্ন শিল্প সংস্থার প্রতিনিধিরাও ছিলেন। ছিলেন কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির (সিআইআই) প্রতিনিধি অনিল ভাস্বামী। তিনি বলেন, “এই কেন্দ্র গড়া হলে শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, গোটা ভারতের শিল্প উপকৃত হবে। বড় শিল্প সংস্থার সঙ্গে ছোট শিল্প সংস্থাগুলিও এই কেন্দ্রের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে পারবে।”
আইআইটি খড়্গপুরে আগে থেকেই বিভিন্ন শিল্প প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা হয়েছে। এই কেন্দ্র গড়ে উঠলে শিল্পের উন্নয়নে জোয়ার আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ দিন বৈঠকের পরে আইআইটির আগ্রহ দেখে খুশি মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তাই দ্রুত এই কেন্দ্র গড়ার কাজে এগোনো হবে বলেও দাবি করেছেন তিনি। বাবুল সুপ্রিয় বলেন, “দিল্লিতে একটি বৈঠকে পরে আমি মনে করেছিলাম পশ্চিমবঙ্গে এমন কেন্দ্র গড়ে তোলা প্রয়োজন। তখনই আইআইটির অধিকর্তার কথা হয়েছিল। তিনি খুব উৎসাহ দেখিয়েছিলেন। এখানে এসে শিল্প সংস্থাগুলির সাড়া পেলাম। এই কেন্দ্র গড়ার কাজ দ্রুত গতিতে হবে।”
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এই কেন্দ্র গড়ার বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করা হবে বলে মন্ত্রী এ দিন জানিয়েছেন। ফের ৬ জানুয়ারি এ নিয়ে বৈঠক হবে।