মায়াচরের ক্ষোভ ‘দিদিকে বলো’য়

বৃষ্টির জেরে বিকেলের কর্মসূচি সন্ধে গড়িয়ে রাতে শুরু হয়। জনতার দরবারে হাজির ছিলেন মায়াচরের বেশ কয়েকজন বাসিন্দাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মহিষাদল শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৫১
Share:

প্রতীকী ছবি।

মায়াচর নিয়ে শাসকদলের অস্বস্তি আর কাটছে না। এ বার ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে উঠল মায়াচর প্রসঙ্গ। রূপনারায়ণের তীরে গড়ে ওঠা দ্বীপ মায়াচরকে পূর্ব মেদিনীপুরের মধ্যেই রাখতে হবে। সেই সঙ্গে মায়াচর এবং অমৃতবেড়িয়ার মধ্যে জলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরায় চালু করতে হবে বলে দাবি তুললেন এলাকার বাসিন্দারা।

Advertisement

ক’দিন আগে বেসরকারি চ্যানেলে সম্প্রচারিত হয় রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর এক বিবৃতি। সেখানে শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, মায়াচরকে হাওড়া জেলার অন্তর্ভুক্ত করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। পুজোর ছুটির পরে এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে পাঠাতেও বলা হয়েছে। তারপর থেকে ক্ষোভ ছড়িয়েছে এই দ্বীপভূমিতে। শনিবার বিকেলে মহিষাদলের অমৃতবেড়িয়ায় ‘দিদিকে বলো’র জনসংযোগে তৃণমূলের নেতারা পৌঁছলে তাঁদেরও শুনতে হয় মায়াচরের ক্ষোভ।

বৃষ্টির জেরে বিকেলের কর্মসূচি সন্ধে গড়িয়ে রাতে শুরু হয়। জনতার দরবারে হাজির ছিলেন মায়াচরের বেশ কয়েকজন বাসিন্দাও। কর্মসূচিতে হাজির মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ও ব্লক তৃণমূল সভাপতি তিলক চক্রবর্তীর সামনেই মায়াচর প্রসঙ্গে সরব হন সিন্দারা। অমৃতবেড়িয়ার এক জন বলেন, ‘‘নদীর অপর প্রান্তে মায়াচরে আত্মীয়ের বাড়ি। মাসখানেক হতে চলল দুই পরিবার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। নৌকো বন্ধ থাকায় নিজের লোকগুলোকে চোখের দেখাও দেখতে পারছি না।’’ আরও অনেকেই ব্লক সভাপতির সামনে দাবি তোলেন, অবিলম্বে মায়াচর এবং অমৃতবেড়িয়ার মধ্যে রূপনারায়ণে নৌকো চলাচল শুরু করতে হবে।

Advertisement

গত ৩০ সেপ্টেম্বর মায়াচর থেকে যাত্রীবোঝাই নৌকো অমৃতবেড়িয়া আসার পথে বানের জলে ভেসে যায়। তলিয়ে মারা যান দুজন। সাঁতার কেটে প্রাণে বাঁচেন ৩৮ জন। তারপরই ওই পথে খেয়া চলাচল বন্ধ করে দেয় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। আপাতত মায়াচরের বাসিন্দাদের মহিষাদলের গেঁওখালির মাধ্যমে যাতায়াত করতে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে প্রথমে আধঘন্টা সাইকেলে চেপে তারপর রূপনারায়ণ পেরিয়ে গেঁওখালি পৌঁছতে হচ্ছে।

এর মধ্যে শুভেন্দুর বক্তব্যে ক্ষোভ আরও বাড়ে। পূর্ব মেদিনীপুর ছেড়ে যাবেন না বলে ঘোষণা করে দেন মায়াচরের বাসিন্দারা। তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব ও পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরাও দ্বীপবাসীর মতকে সমর্থন করেন। এই পরিস্থিতিতে ব্লক সভাপতির ‘দিদিকে বলো’ কমর্সূচিতে ফের মায়াচরের দাবি আসায় এ নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। রবিবার ব্লক তৃণমূল সভাপতি তিলক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জনসংযোগ কর্মসূচি চলাকালীন স্থানীয়রা মায়াচর প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। যেহেতু বিষয়টি জেলা নেতৃত্ব এবং পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী নিজে দেখছেন, তাই ওঁদের কাছে স্থানীয়দের বক্তব্য তুলে ধরব বলে আশ্বাস দিয়েছি।’’

পাঁশকুড়ার প্রতাপপুর পঞ্চায়েত এলাকার আমড়াগোহালেও অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘দিদিকে বলো’। এদিন আমড়াগোহাল উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে এই কর্মসূচিতে এলাকার প্রায় দু’শো মানুষ যোগ দেন। উপস্থিত ছিলেন প্রতাপপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শঙ্করপ্রসাদ সামন্ত, তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতি দীপ্তি জানা প্রমুখ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন