নতুন পঞ্চায়েত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
জেলার অধিকাংশ পঞ্চায়েতই তৃণমূলের দখলে। তবে পঞ্চায়েতের কাজ নিয়ে অসন্তোষে ঘাটতি নেই। রয়েছে স্বজনপোষণ আর বঞ্চনার ভূরি ভূরি অভিযোগ। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জেলায় এসে তাই কড়া বার্তাই দিয়ে গেলেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
জেলার অধিকাংশ পঞ্চায়েতই তৃণমূলের দখলে। তবে পঞ্চায়েতের কাজ নিয়ে অসন্তোষে ঘাটতি নেই। রয়েছে স্বজনপোষণ আর বঞ্চনার ভূরি ভূরি অভিযোগ। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জেলায় এসে তাই কড়া বার্তাই দিয়ে গেলেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। শনিবার মেদিনীপুরে জেলা পঞ্চায়েত প্রশিক্ষণ এবং সম্পদ কেন্দ্রের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সুব্রতবাবু বলেন, “যদি গ্রামের মানুষ বঞ্চিত হন দু’বছর, চার বছর, দশ বছর, কুড়ি বছর, তারপর তারা একদিন বিদ্রোহও করতে পারেন। যা হয়েছে বহু দেশে। তাই মানুষের সঙ্গে সংযোগ বৃদ্ধি করতে হবে।”
সুব্রতবাবুর পাশাপাশি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ছিলেন পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা, জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণমন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতো, পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা, জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ প্রমুখ। পঞ্চায়েতের নির্বাচিত সদস্যদের প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে রাজ্য আইন আনার কথা ভাবছে বলেও জানান সুব্রতবাবু। তাঁর কথায়, “আমি এই আইন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রাখতে চলেছি। নির্বাচিত সদস্যদের দু’টো শংসাপত্র নিতে হবে। একটা নির্বাচন কমিশনের, অন্যটা এই প্রশিক্ষণের।” পঞ্চায়েতমন্ত্রীর মন্তব্য, “শিখে কাজ করতে গেলে দেখবেন আপনার মর্যাদা, অনেক বাড়বে। নিয়মমাফিক কাজের খুঁটিনাটি সবাই জানেন না। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার প্রায়ই নীতি-আইন পরিবর্তন করে। সেগুলো সম্পর্কে সব সময় অবগত থাকতে হবে।” পঞ্চায়েত মন্ত্রীর মতে, ‘‘এতে আপনার অধিকারবোধ আরও নতুন করে তৈরি হবে। প্রশিক্ষিত না হলে আপনার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কেউ কিছু করে দিতে পারে।”
মেদিনীপুর শহরের অদূরেই তৈরি হয়েছে জেলা পঞ্চায়েত প্রশিক্ষণ এবং সম্পদ কেন্দ্র। নতুন এই কেন্দ্র দেখভালের দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসনকেই নিতে হবে বলে জানান পঞ্চায়েতমন্ত্রী। তিনি বলেন, “এটা স্কুলের মতো। এটাও একটা শিক্ষার জায়গা। একে সেই ভাবেই রক্ষা করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসনকে উদ্যোগী হতে হবে।” গ্রামে গ্রামে পিচ রাস্তা তৈরিতে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান সুব্রতবাবু। প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা প্রসঙ্গে মন্ত্রীর বক্তব্য, রাস্তা তৈরির সময় পাঁচ বছরের চুক্তি হয়। এই সময়ের মধ্যে রাস্তা মেরামত করার কথা সংশ্লিষ্ট সংস্থারই। তারা টাকাও পায়। তাই রাস্তা মেরামত না করলে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে ‘ব্ল্যাক লিস্ট’ করার হুঁশিয়ারি দেন মন্ত্রী।
প্রশংসার পাশাপাশি এ দিন জেলাকে সতর্কও করেন মন্ত্রী। আনন্দধারা প্রকল্পে জেলার সাফল্যের কথা উল্লেখ করলেও ‘মিশন নির্মল বাংলা’য় কেন জেলা পিছিয়ে, সেই প্রশ্ন তোলেন সুব্রতবাবু। জেলাকে সতর্কও করেন তিনি। পাশে বসা জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ তখন মন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, “দাদা, করে দেবো।” যা শুনে মন্ত্রীর বক্তব্য, “উত্তরা বলছে করে দেবে। করে না দিলে উত্তরাকেই ধরব।”