এ ঠিক যেন প্রদীপের তলায় অন্ধকার। রাজ্যের বৃহত্তম তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কোলাঘাটের পাশেই ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কে একটা বড় অংশ আলোকহীন। সন্ধে নামলেই অন্ধকারে ডুবে যায় গোটা উড়ালপুল, ভরসা বলতে কয়েক হাজার বাস, লরির হেডলাইট।
হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কে প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনের উড়ালপুল দিয়ে ছুটে যায় হলদিয়া শিল্পাঞ্চলগামী হাজারো পণ্যবাহী লরি। কলকাতা–দিঘা বা অন্য বহু রাজ্যে যাতায়াতকারী সরকারি, বেসরকারি কয়েকশো বাস, গাড়ি চলাচল করে এই উড়ালপুল দিয়ে। পাশেই মেচেদা স্টেশন, কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড, বহুতল বাসভবন, বাজার, বিলাসবহুল হোটেল, গেস্ট হাউস। অথচ, সামান্য আলোর ব্যবস্থা নেই উড়ালপুলে। বাসস্টপেজে অন্ধকারে দাঁড়িয়েই অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীদের। তাঁদের অভিযোগ, এই অন্ধকারের ফায়দা তুলে দিনের পর দিন দুষ্কর্ম বাড়ছে উড়ালপুল ঘিরে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা-মুম্বই ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের যোগাযোগ গড়ে তুলতে ২০০২ সাল নাগাদ হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ করে চার লেন তৈরির কাজ শুরু হয়। ওই সময়েই মেচেদা বাজারের কাছে ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক ও হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের সংযোগস্থলে চার লেনের উড়ালপুলও তৈরি হয়। কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সামনেই মেচেদার সবচেয়ে জনবহুল এলাকায় ওই উড়ালপুল তৈরির ফলে জাতীয় সড়কে লরি, তেল বা গ্যাস ট্যাঙ্কার, দূরপাল্লার বাস, যাত্রীবাহী গাড়ি ও অন্যান্য গাড়ি চলাচল সুবিধা হয়েছে। দিঘা এবং হলদিয়া থেকে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন দিকে যাতায়াতকারী সরকারি, বেসরকারি বাসের জন্য তৈরি হয়েছে একাধিক স্টপেজও। কিন্তু এত বছর পর আলোর ব্যবস্থা করা যায়নি।
মেচেদা বাজারে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন চণ্ডীপুরের বাসিন্দা সুদর্শন দাস। তাঁর অভিজ্ঞতায়, ‘‘কাজ সেরে বাড়ি ফিরতে রাত ৮ টা বেজে যায়। উড়ালপুল থেকে দিঘাগামী বাস ধরি। অন্ধকারে ওই উড়ালপুলে দাঁড়িয়ে থাকতে ভয়ই করে।’’ মেচেদার বাসিন্দা, চিকিৎসক শুভজিৎ অধিকারী বলেন, ‘‘আলো নেই বলেই দুষ্কৃতীদের আড্ডাও বাড়ছে।
এই উড়ালপুলে আলোর ব্যবস্থা হলে রাতে মেচেদা শহরের ছবিটাই বদলে যেত।’’
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কলকাতা বিভাগের প্রজেক্ট ডিরেক্টর অজিতকুমার সিংহ জানেন সমস্যার কথা। তাঁর আশ্বাস, ‘‘প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’ এত বছরেও কেন সে পদক্ষেপ করা যায়নি? উত্তর মেলে না।