পুজোয় যাত্রী সুরক্ষায় বাড়তি নজর দিতে বিশেষ বাহিনী নিযুক্ত করবে রেল। নজরদারি বাড়াতে আরপিএফ জওয়ানদের কাজের সময়ও বাড়ানো হয়েছে বলে রেল সূত্রে খবর।
পুজো সংক্রান্ত বিশেষ অপরাধ মোকাবিলা নিয়ে আলোচনার জন্য বুধবার খড়্গপুর ডিভিশনের রেল সুরক্ষা বাহিনীর (আরপিএফ) পক্ষ থেকে বৈঠক ডাকা হয়। সিনিয়র ডিভিশনাল সিকিউরিটি কমিশনারের অফিসে আয়োজিত বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন প্রতিটি আরপিএফ পোস্ট ও বিশেষ শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকেরা। বৈঠকে পুজোর চার দিন আরপিএফ কীভাবে কাজ করবে তার একটি রূপরেখা তৈরি হয়।
মূলত ট্রেন ও স্টেশনে পুজোর ভিড়ে যাত্রী সুরক্ষা যাতে কোনওভাবে বিঘ্নিত না হয় সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, নজরদারি বাড়াতে আরপিএফের বাঙালি কর্মীদের পুজোর দিনগুলিতে কাজের সময়সীমা ৮ ঘণ্টার বদলে ১২ ঘণ্টা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছর পুজোর সময় স্টেশন চত্বরে বাড়তি নিরাপত্তায় জোর দেয় রেল। বিগত বছরগুলি থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার নিজেদের পরিকল্পনায় কিছু বদল আনা হয়েছে। এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, এ বার শুধু এক্সপ্রেস ট্রেন নয়, ডিভিশনের প্রতিটি লোকাল ট্রেনে সন্ধ্যার পরে আরপিএফ থাকবে। বিশেষ করে হাওড়া-মেদিনীপুর শাখার লোকাল ট্রেনগুলিতে বিশেষ অভিযান চলবে। এ ছাড়াও প্রতিটি ট্রেন ও স্টেশনে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে এখন থেকেই সাদা পোশাকে অভিযান চালাবে রেলের অপরাধদমন শাখা ও টাস্ক ফোর্স। এ ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ভদ্রক শাখার সমস্ত ট্রেনগুলিতে। সহযাত্রী সেজে মাদক মেশানো খাবার খাইয়ে লুট, মোবাইল, মানিব্যাগ থেকে লাগেজ ব্যাগ চুরি ঠেকাতেও নজরদারি চালাবে অপরাধদমন শাখার ৬জনের বিশেষ দল।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, গোপন সূত্র কাজে লাগিয়ে ওই দল বিভিন্ন দিনে বিভিন্ন ট্রেনে অভিযান চালাবে। খাকি পোশাকেও স্টেশন চত্বরে টহলদারি চালাবে আরপিএফ। এ ছাড়া সিসি ক্যামেরাতেও চলবে নজরদারি। নজর রাখতে পুজোর চারদিনের জন্য মেচেদা, আন্দুল, পাঁশকুড়া, দেউলটি-সহ ৬টি স্টেশনে অতিরিক্ত সিসি ক্যামেরাও বসানো হচ্ছে। তবে বর্তমানে খড়্গপুর ডিভিশনে আরপিএফের সংখ্যা সবমিলিয়ে প্রায় ১ হাজার ৭০০জন। কর্মী সংখ্যা কম থাকায় নিরাপত্তায় ফাঁক থেকে যাবে না তো, এমনও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, বিভিন্ন ট্রেনে আরপিএফের সংখ্যা ১০ জন থেকে কমিয়ে ৭ জন করে দেওয়া হবে। এমনকী বিভিন্ন পোস্ট থেকে কিছু আরপিএফ তুলে বিশেষ নজরদারিতে লাগানো হবে। এ ভাবে প্রায় ৮০ জন আরপিএফ জওয়ানকে নজরদারির কাজে লাগানো হবে। খড়্গপুরে রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল সিকিউরিটি কমিশনার অশোককুমার রায় জানান, আমরা এ বারের ক্রাইম মিটিংয়ে পুজো নিয়ে বৈঠক করেছি। পুজোর দিনগুলিতে বিশেষ অভিযান চলবে। লোকাল ট্রেনেও আরপিএফ থাকবে। সিসিটিভি ক্যামেরায় নজরদারি চালানো হবে। সাদা পোশাকেও বাহিনী থাকবে।