রুম্পা প্রামাণিক। নিজস্ব চিত্র
মাস কয়েক আগের ঘটনা। তখন বর্ষাকাল চলছে। সে দিন আকাশ ছিল মেঘলা, মাঝেমধ্যে বৃষ্টিও হচ্ছিল। তার মধ্যেই স্কুলে গিয়েছিল মেয়েটি। দুপুরে ক্লাস চলাকালীন হঠাৎই জানলার বাইরে চোখ চলে যায় একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীর। সে দেখে, স্কুলের কাছেই পুকুরে এক শিশু ভাসছে। মেয়েটার পরনে শাড়ি। কিন্তু বাচ্চাটাকে তো বাঁচাতে হবে।
তাই আর কিছু না ভেবে ক্লাসরুম থেকে ছুট দিল সে। ঝাঁপ দিল পুকুরে। বাচ্চাটা তখন মাঝপুকুরে ভাসছে। সাঁতরেই সেখানে পৌঁছয় ওই ছাত্রী। বছর আড়াইয়ের শিশুটির প্রাণ বাঁচিয়ে নিয়ে আসে পাড়ে। নারায়ণগড়ের সরিষা কুনারপুর অঞ্চল হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী সেই রুম্পা প্রামাণিকের সাহসকে এ বার কুর্নিশ জানাতে চলেছে রাজ্য সরকার। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, শিশু দিবসের অনুষ্ঠানে সাহসিকতার জন্য সম্মানিত করা হবে রুম্পাকে। আগামী ২০ নভেম্বর কলকাতায় এই অনুষ্ঠান হতে পারে বলে খবর।
এর আগে জেলায় কন্যাশ্রী দিবসের অনুষ্ঠানে রুম্পাকে সংবর্ধিত করেছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক পি মোহনগাঁধী। এ বার রাজ্যের তরফে সেই কন্যা সংবর্ধিত হতে চলেছে জেনে খুশি জেলাশাসকও। তাঁর কথায়, ‘‘নারায়ণগড়ের ওই মেয়েটির সাহসের প্রশংসা করতেই হয়।’’
আরও পড়ুন: গুজরাতে বিহারি খেদাও হচ্ছে, অসমে বাঙালি খেদাও হচ্ছে: মমতা
গ্রামের সকলের মুখে মুখেও ঘোরে রুম্পার সাহসিকতার কাহিনি। যে শিশুটিকে সে বাঁচিয়েছিল সে এখন পুরোপুরি বিপন্মুক্ত। রুম্পার বাবা পূর্ণচন্দ্র প্রামাণিক বলছিলেন, "মেয়ের জন্য গর্ববোধ হয়। বৃহস্পতিবার সকালেই ফোন পেয়েছি। জেলা থেকে ফোন করে কলকাতায় যাওয়ার কথা জানানো হয়েছে। ২০ নভেম্বর মেয়েকে নিয়ে কলকাতায় যেতে হবে।"
রুম্পা নিদে অবশ্য নির্লিপ্তই। সে শুধু বলে, ‘‘কারও বিপদে পাশে দাঁড়ানোটা তো আমাদের কর্তব্য।’’