মডেলের খুঁটিনাটি সামলাতে ব্যস্ত খুদেরা। নিজস্ব চিত্র
বছর খানেক আগেও যাদের শুনতে হয়েছে, ‘তারা কিছু পারে না’। তারাই করে দেখিয়ে দিল। ওরা সরকারি প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রী।
প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের হাতে তৈরি বিভিন্ন মডেল নিয়ে এক বিজ্ঞান প্রদর্শনী হল মেদিনীপুর শহরের রবীন্দ্র নিলয়ে। সাধারণত, হাইস্কুলের ক্ষেত্রে এমন প্রদর্শনী হয়। প্রাথমিকের ক্ষেত্রে এমন প্রদর্শনী আয়োজনের উদ্যোগ মেদিনীপুর সদর আর্বান- ১ চক্রের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের। চক্রের বিদ্যালয় পরিদর্শক অরুণাভ প্রহরাজ বলেন, ‘‘প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বিজ্ঞান শিক্ষায় আগ্রহী করার জন্যই এই উদ্যোগ। এতে ওদের পঠনপাঠনে উৎসাহ বাড়বে।’’
শুধু প্রদর্শনী নয়, বৃহস্পতিবার বিজ্ঞান কর্মশালাও হয়েছে। প্রদর্শনী এবং কর্মশালার উদ্বোধনে ছিলেন জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি নারায়ণ সাঁতরা, মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক দীননারায়ণ ঘোষ। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘প্রাথমিকস্তরে এমন প্রদর্শনী খুব কমই দেখা যায়। উদ্যোগটা ভাল। এর থেকে বিজ্ঞান মানসিকতা গড়ে উঠবে।’’ প্রদর্শনীতে চক্রের ১৫টি প্রাথমিক স্কুল অংশগ্রহণ করেছে। অরুণাভের কথায়, ‘‘এই প্রদর্শনী নিশ্চিতভাবে প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিজ্ঞান চেতনা আরও বাড়াবে। তাদের আরও উৎসাহিত করবে।’’ একে একে প্রদর্শনীতে থাকা মডেলগুলো ঘুরে দেখেন সংসদের সভাপতি, মহকুমাশাসক। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গেও কথা বলেন তাঁরা।
নিজেদের হাতে তৈরি বিজ্ঞান- মডেল নিয়ে প্রদর্শনীতে এসেছিল সুহানা সুলতানা, পিয়ালি সাঁতরা, সায়ন সাউ, কৃষ্ণা দাসরা। সুহানারা শৈলবালা প্রাথমিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া। সায়নরা মেদিনীপুর টাউন প্রাথমিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়ারা। সুহানা, পিয়ালি পরিবেশ দূষণ নিয়ে এক মডেল বানিয়েছে। সায়ন, কৃষ্ণা চাকার বিবর্তন নিয়ে এক মডেল বানিয়েছে। কৃষ্ণারাই জানাল, বছর খানেক আগেও তাদের মনে হত, ‘তারা কিছু পারে না’। অনেকের কাছে এমন কথা শুনতেও হয়েছে তাদের। কিন্তু এখানে পরিবেশটাই আলাদা। সকলে উৎসাহ দিয়েছেন। চক্রের বিদ্যালয় পরিদর্শক অরুণাভ প্রহরাজের কথায়, ‘‘ওরাও যে ভাল মডেল বানাতে পারে সেটা দেখিয়ে দিয়েছে।’’ পিয়ালি, সায়নরা বলছিল, ‘‘এই প্রথম এমন প্রদর্শনীতে এলাম। আবার আসতে চাই।’’