ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য ধানবীজ পূর্বে

বন্যা এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত আমন ও আউশ ধান চাষিদের পুনরায় চাষের স্বল্প মেয়াদী জাতের ধান বীজ বরাদ্দ করল রাজ্য কৃষি দফতর। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের দেওয়ার জন্য ৮৭১ মেট্রিক টন বীজধান বরাদ্দ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এই বীজধান জেলায় এসে গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কৃষি দফতরের উপ-অধিকর্তা সুশান্ত মহাপাত্র সোমবার বলেন, ‘‘ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে বন্যার ফলে জেলায় আমন ও আউশ ধানের রোয়া, বীজতলার প্রচুর ক্ষতি হয়েছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৫ ০০:৫১
Share:

বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে আমন ধানের চারার। নিজস্ব চিত্র।

বন্যা এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত আমন ও আউশ ধান চাষিদের পুনরায় চাষের স্বল্প মেয়াদী জাতের ধান বীজ বরাদ্দ করল রাজ্য কৃষি দফতর। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের দেওয়ার জন্য ৮৭১ মেট্রিক টন বীজধান বরাদ্দ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এই বীজধান জেলায় এসে গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কৃষি দফতরের উপ-অধিকর্তা সুশান্ত মহাপাত্র সোমবার বলেন, ‘‘ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে বন্যার ফলে জেলায় আমন ও আউশ ধানের রোয়া, বীজতলার প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। জেলার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ফের দ্রুত চাষের কাজে সাহায্য করতে বীজধান ও সারের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। ইতিমধ্যে কৃষকদের ধান বীজ দেওয়ার জন্য জেলায় মোট ৮৭১ মেট্রিক টন ধান বীজ পাঠানো হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই কৃষকদের তা বন্টন করা হবে।’’
জেলার কৃষি উপ-অধিকর্তা জানান, আমন ধান রোয়ার জন্য সময় এখনও রয়েছে। তবে অনেক কৃষকের বীজতলা নষ্ট হওয়ায় নতুন করে বীজতলা তৈরি করতে হবে। সেজন্য স্বল্প মেয়াদী জাতের ধানবীজ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বল্প মেয়াদী জাতের এমটি ১০১০ ও গোঠরা বিধান-১ এই দুই জাতের ধানবীজ বিলি করার জন্য এসেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ৬ কেজি করে এই বীজধান দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সম্প্রতি অতিবৃষ্টির জেরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাটের পাশাপাশি জেলায় ধান, পান, ফুল, সব্জি, মশলা ও মাছ চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলা কৃষি দফতরের হিসেব অনুয়ায়ী, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ২৫ টি ব্লকের সবকটিতে আমন ধানের রোয়া ও বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও জেলার কয়েকটি ব্লকে আউশ ধানের রোয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে জেলায় ১ লক্ষ ২৬ হাজার ৪৩৮ হেক্টর জমির ধান চাষের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ হাজার হেক্টর জমির বীজধানের চারাগাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবার জেলার মধ্যে তমলুক ও হলদিয়া মহকুমার প্রায় সব ব্লকে ক্ষতির পরিমান অপেক্ষাকৃত বেশী।

Advertisement

জেলা কৃষি দফতরের উপ-অধিকর্তা জানান, সাধারণভাবে আমন ধান রোয়ার সময় ৩১ অগস্ট পর্যন্ত। তবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমন ধান রোয়ার কাজ চলে। সেই হিসেবে জেলায় আমন ধান রোয়ার জন্য এখনও প্রায় এক মাস সময় রয়েছে। ধানের বীজতলা তৈরির জন্য প্রায় তিন সপ্তাহ ( ২০-২২ দিন) সময় লাগবে। তাই বন্যা পরবর্তী সময়ে ফের দ্রুত বীজতলা তৈরি করে ধান রোয়ার কাজ করতে স্বল্প মেয়াদী জাতের ধানবীজ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সার ও কীটনাশক দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

কিন্তু বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অনেক এলাকাতেই এখনও চাষের জমিতে প্রচুর জল জমে রয়েছে। এই অবস্থায় সেখানে কৃষকরা কীভাবে পুনরায় চাষের কাজে নামবে? জেলা কৃষি দফতরের উপ-অধিকর্তা জানান, বন্যা পরবর্তী সময়ে টিকে যাওয়া ধানের রোয়া জমি ও বীজতলার পরিচর্যা কিভাবে করতে হবে ও পুনরায় চাষের জন্য জমি কিভাবে প্রস্তুত করতে হবে তা কৃষকদের কাছে বিস্তারিতভাবে জানাতে কৃষি দফতরের পক্ষ থেকে জেলায় মোট এক লক্ষ লিফলেট বিলি করা হচ্ছে। জেলার ২৫টি ব্লকের প্রতিটিতে চার হাজার করে ওই লিফলেট বিলি করা হবে। জেলা কৃষি দফতরের উপ-অধিকর্তা আরও জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কৃষকদের পুনরায় চাষে সাহায্যের আপাতত স্বল্প মেয়াদী জাতের ধানবীজ দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। এরপর শীতকালীন চাষের জন্য সর্ষে, সূর্যমুখী প্রভৃতি তৈলবীজ ও মুসুর, খেসারি ডালের মিনিকিট দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন