শিল্প চেয়ে চাঁদা তুলে বিশ্বকর্মা বন্দনা

 ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, গোয়ালতোড়ের কৃষি দফতরের সিড ফার্মের প্রায় হাজার একর সরকারি জমিতে শিল্প গড়ে তোলা হবে। সেই খবরে খুশির বাঁধ ভেঙেছিল ফার্ম জুড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোয়ালতোড় শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০১
Share:

সবে-মিলে: তৈরি হচ্ছে লুচি। নিজস্ব চিত্র

শিল্প আসুক। চাইছেন গোয়ালতোড়ের জিরাপাড়ার দুর্গাবাঁধের সরকারি সিড ফার্মের শ্রমিক-কর্মচারীরা। তাই নিজেরা চাঁদা তুলেই দেব কারিগরের আরাধনায় মাতলেন তাঁরা।

Advertisement

২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, গোয়ালতোড়ের কৃষি দফতরের সিড ফার্মের প্রায় হাজার একর সরকারি জমিতে শিল্প গড়ে তোলা হবে। সেই খবরে খুশির বাঁধ ভেঙেছিল ফার্ম জুড়ে। শিল্পের আশায় সে বছর বিশ্বকর্মা পুজোটাও জাঁকজমক করে হয়েছিল। এলাকার বাসিন্দাদের পাত পেড়ে খাওয়ানোর আয়োজন করা হয়েছিল। প্রস্তাবিত শিল্প তালুক এলাকায় বিশ্বকর্মা পুজো দেখতে বাইরের বহু মানুষও এসেছিলেন। সেই রেশ পরের বছরও ছিল। তবে তা ফিকে হতে আরম্ভ করে গতবছর থেকে। গতবার দুর্গাবাঁধের সরকারি ফার্মে বিশ্বকর্মা পুজোয় পঙক্তিভোজনের আয়োজন করা হলেও, হয়নি কোনও অনুষ্ঠান, ছিল না সেই জৌলুসও।

এবার পুজো করার মতো টাকা সরকারি সিড ফার্মে ছিল না। কীভাবে পুজো হবে, খরচই বা কোথা থেকে আসবে তা ভেবেই অস্থির হয়ে উঠেছিলেন ফার্মের সঙ্গে যুক্ত স্থায়ী - অস্থায়ী কর্মীরা। শেষমেশ পুজো করতে নিজেরাই চাঁদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ঠিক হয় সিড ফার্মের ক্যাজুয়াল ২৩৭ জন কর্মী প্রত্যেকেই দেবেন ১০০ টাকা করে। ৩৫ জন কৃষি শ্রমিক দেবেন ২০০ টাকা করে। ফার্মের ৮ জন স্থায়ী কর্মচারী দেবেন ৪০০ টাকা করে। ফার্মের অধিকর্তা সিজার মজুমদার বলেন, ‘‘এবার পুজোর জন্য নিজেরাই চাঁদা দিয়েছি। সকলের চাঁদাতেই এবার বিশ্বকর্মার পুজো হচ্ছে ফার্মে।’’

Advertisement

পুজো হলেও জাঁক নেই এবারও। টাকার অভাবে এবার এলাকার বাসিন্দাদের জন্য পাতপেড়ে খাওয়ার ব্যবস্থা নেই। গত কয়েকবছরের রুটিন খিচুড়ি-আলুপোস্তর বদলে এবার থাকছে প্যাকেটবন্দি লুচি আর বোঁদে। এ বার কেনও এই ব্যবস্থা? সিজার বলেন, ‘‘পঙক্তিভোজনের ব্যবস্থা করলে ৯-১০ হাজার টাকা ঘাটতি থেকে যায়। তাছাড়া প্রচুর মানুষ ভিড় করায় সবদিক সামলান যায় না। তাই এবার তিন - চারশো লোকের আয়োজন করা হয়েছে।’’

পুজোর সময় আশেপাশের গ্রামের বাসিন্দারা ফার্মে আসেন। সকালে পুজো দেখতে এসে দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে বিকেলে বাড়ি ফেরেন। গীতা মাহাতো, সুশীলা মাহাতো, দুর্যোধন গিরিদের মতো অনেকেই এদিন ফার্মে এসে হতাশ। তাঁরা বলেন, ‘‘প্রতিবারে দুপুরে খিচুড়ি খাওয়ানো হয়, এবার হয়নি, শুধু লুচি বোঁদের প্যাকেট!’’ ফার্মের কয়েকজন শ্রমিকের কথায়, ‘‘নিজেদের পকেট থেকে বিশ্বকর্মার পুজো করছি। প্রার্থনা একটাই। সব যেন ভাল ভাবে চলে। শিল্পও আসে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন