নদিয়ায় বিষমদ কাণ্ডে মৃত্যুর জেরে রাজ্যের সর্বত্র চোলাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। গত ২৮ নভেম্বর থেকে চলতি মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত পাঁশকুড়া ও কোলাঘাটের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে আবগারি পুলিশ।
আবগারি দফতর সূত্রে খবর, পাঁশকুড়ার মানুর, রাধাবল্লভচক, গুঁয়াই, সাঁইতিয়া, কেশাপাট, কোলাঘাটের কুমারহাট, দাসপাড়া, কোলাঘাট বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩৮৬ লিটার চোলাই, ৬ লিটার বাংলা মদ-সহ চোলাই তৈরির কাঁচা মাল এবং সরঞ্জাম ও একটি সাইকেল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। লাইসেন্সবিহীন বেশ কিছু দোকান থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে প্রায় ১৩ লিটার বিদেশি মদ। ওই সব চোলাই কারবারীদের বিরুদ্ধে মোট ১৬টি মামলা শুরু করেছে পুলিশ। চোলাই তৈরি ও বিক্রির অভিযোগে বর্তমানে সর্বোচ্চ শাস্তি তিন বছরের জেল। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে চোলাই কারবারীরা অল্প কিছুদিন জেলে থাকার পর বেরিয়ে এসে ফের ব্যবসা শুরু করছে। তাঁদের মতে, চোলাইয়ের শাস্তি আরও কঠোর হওয়া দরকার।’’
তবে লাগাতার অভিযানের পরেও চোলাইয়ে রাশ টানা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। কোলাঘাটের বাসিন্দাদের একাংশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সব জায়গায় চোলাই তৈরি হয় সেখানে চোলাই কারবারীরা মূল রাস্তাগুলিতে নিজেদের লোক দিয়ে নজরদারি চালায়। আবগারি দফতরের অভিযানের আগাম খবর পৌঁছে দেয় তারাই। ফলে পুলিশ পৌঁছনোর আগেই, চোলাই কারবারীরা সামান্য কিছু চোলাই রেখে বেশিরভাগটাই সেখান থেকে সরিয়ে ফেলে বলে অভিযোগ। পুলিশকে সামান্য চোলাই উদ্ধার করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। পুলিশ এলাকা ছাড়ার পর ফের স্বমহিমায় ব্যবসা শুরু করে চোলাই কারবাসীরা। সোমবার পাঁশকুড়ার মাইশোরা, কেশাপাট, মেচগ্রাম, জানাবাড় ও কোলাঘাটের দাসপাড়া, পিরতলা প্রভৃতি এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি ও ধরপাকড় চালায় আবগারি দফতর।
স্থানীয় সূত্রে খবর কোলাঘাটের পুলসিটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কুমারহাট এলাকায় চোলাইয়ের কারবার দীর্ঘদিনের। বছর দুয়েক আগে এলাকার মানুষের দাবিতে জেলাশাসকের হস্তক্ষেপে এলাকার সমস্ত চোলাইয়ের ঠেক ভেঙে দেয় আবগারি দফতর। সে বার প্রশাসন এতটাই কঠোর পদক্ষেপ করে যে ওই এলাকার চোলাই কারবারীরা আর চোলাইয়ের ব্যবসা করবে না বলে পুলিশের কাছে মুচলেকা দিয়ে গ্রামে ঢোকে। কিন্তু ফের এই এলাকায় চোলাইয়ের রমরমা শুরু হয়েছে। আবগারি দফতরের এক আধিকারিক দিব্যেন্দু বেরা বলেন, ‘‘কিছুদিন আগেই আমরা কুমারহাটে অভিযান চালিয়ে চোলাই নষ্ট করেছি। এক একটি জায়গায় দিনে তিন থেকে চারবার অভিযান চলছে। অভিযানের পাশাপাশি আমরা চোলাইয়ের ক্ষতিকর দিক নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে মাইকে প্ৰচার ও লিফলেট বিলি করছি।’’