এ বছরের ‘শিক্ষারত্ন’ পূর্বের পাঁচ শিক্ষক

দিনের বেশি সময়টা কাটে স্কুলেই। ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ানো, তাদের নানা কৌতুহলের জবাব দেওয়া-এ সব করতে করতেই কখন সন্ধ্যে হয়ে যায়। গত তিন বছর ধরে মাধ্যমিক ও উচ্চ-মাধ্যমিকে একজন ছাত্র-ছাত্রীও ফেল করেনি। নন্দীগ্রামের প্রত্যন্ত আমদাবাদ এলাকার সুবদি সীতানাথ বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলের এমন ফলের অন্যতম কারিগর প্রধান শিক্ষক জনমেজয় দিন্দা এ বছর রাজ্য সরকারের দেওয়া ‘শিক্ষারত্ন’ পুরস্কার পাচ্ছেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০১:০৭
Share:

দিনের বেশি সময়টা কাটে স্কুলেই। ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ানো, তাদের নানা কৌতুহলের জবাব দেওয়া-এ সব করতে করতেই কখন সন্ধ্যে হয়ে যায়। গত তিন বছর ধরে মাধ্যমিক ও উচ্চ-মাধ্যমিকে একজন ছাত্র-ছাত্রীও ফেল করেনি। নন্দীগ্রামের প্রত্যন্ত আমদাবাদ এলাকার সুবদি সীতানাথ বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলের এমন ফলের অন্যতম কারিগর প্রধান শিক্ষক জনমেজয় দিন্দা এ বছর রাজ্য সরকারের দেওয়া ‘শিক্ষারত্ন’ পুরস্কার পাচ্ছেন। তাঁর সম্মানের অংশীদার এ বার পূর্ব মেদিনীপুরের আরও তিন শিক্ষক। তাঁরা হলেন পাঁশকুড়া ব্রাডলি বারট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বনমালী সামন্ত, এগরার তেঁতুলিয়া ষড়রং এন এন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বীরকুমার শী, ভগবানপুরের বাজকুল জনকল্যাণ শিক্ষা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক অসীমবিকাশ জানা ও মহিষাদলের উত্তর কাশিমনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবদুলাল বেরা। আজ কলকাতার নজরুল মঞ্চে আয়োজিত অনুস্থানে তাঁদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।

Advertisement

জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সুজিতকুমার মাইতি বলেন, ‘‘জেলার পাঁচজন শিক্ষক এ বার ‘শিক্ষারত্ন’ সম্মান পাওয়ায় আমরা খুশি। এই সম্মান জেলার অন্যান্য স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনুপ্রাণিত করবে ও আগামী দিনে বিদ্যালয়ে পড়াশোনার মানোন্নয়নে উৎসাহ দেবে।’’

নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের সুবদি সীতানাথ বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক জনমেজয় দিন্দা অঙ্ক নিয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন। স্কুলে শিক্ষকতার পাশাপাশি খেলা পাগল এই শিক্ষক খোখো খেলার প্রশিক্ষণ দেন। নিজের স্কুলে গড়ে তুলেছেন মাল্টি-জিম। পাঁশকুড়া ব্রাডলি বারট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বনমালী সামন্তের বাড়ি পাঁশকুড়ার রাজনগর গ্রামে। পদার্থবিদ্যা নিয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করে ১৯৯০ সালে প্রথমে সহ-শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন একসময়ে যেখানে পড়তেন সেই পাঁশকুড়ার শ্যামসুন্দরপুর পাটনা হাইস্কুলে। ২০০৩ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন ব্রাডলি বারট হাইস্কুলে। শিক্ষকতার পাশাপাশি যোগ চর্চা তাঁর নেশা।

Advertisement

এ বার ‘শিক্ষারত্ন’ সম্মান পাওয়া এগরা-১ ব্লকের তেঁতুলিয়া ষড়রং এনএন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বীরকুমার শী অঙ্ক নিয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি সাহিত্য চর্চা ও সমাজসেবা তাঁর নেশা। অঙ্ক নিয়ে একাধিক বই লিখেছেন। এবার পুরস্কার পাওয়া বাজকুল জনকল্যাণ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অসীমবিকাশ জানা বাংলা, ইংরেজি, সংস্কৃত এই তিনটি বিষয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন। এবছর ‘শিক্ষারত্ন’ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার একমাত্র প্রাথমিক শিক্ষক দেবদুলাল বেরা। মহিষাদল পূর্ব চক্রের উত্তর কাশিমনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবদুলালবাবু ১৯৮৮ সালে প্রথমে ওই স্কুলে সহ-শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৯৯ সালে ওই স্কুলে প্রধান শিক্ষক পদে নিযুক্ত হন। পাশের গ্রাম রাজারামপুর গ্রামের বাসিন্দা বছর সাতচল্লিশের দেবদুলালবাবু গত চার বছর ধরে স্কুলে দেওয়াল পত্রিকা ‘আদর্শ’ প্রকাশ করছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন হাতের কাজ ও পুরস্কারের স্মারক, শংসাপত্র নিয়ে বিদ্যালয়ে গড়ে তুলেছেন স্কুলের নিজস্ব সংগ্রহশালা। আপ্লুত দেবদুলালবাবু বলেন, ‘‘আমাদের বিদ্যালয়টি তফসিলি বাসিন্দা অধ্যুষি ত এলাকায়। পিছিয়ে পড়া এই এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করে যাব।’’

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন