খন্দপথ। গোটা সড়ক জুড়েই এমন অবস্থা। নিজস্ব চিত্র
কোথাও বড় বড় গর্ত। কোথাও অনেকটা অংশ জুড়ে পিচের চাদর উঠে গিয়েছে। দূর থেকে একেবারেই বোঝার উপায় নেই। হঠাৎ সামনে এসে চোখে পড়ায় গাড়ির গতি শ্লথ করতে হচ্ছে যানচালকদের। তাতে পিছনের গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা সম্ভাবনাও থেকে যাচ্ছে। তা ছাড়া শেষ মুহূর্তে অনেকে গাড়ির গতি কমাতে না পারায় প্রবল ঝাঁকুনিতে ক্ষতি হচ্ছে গাড়ির। কোনও গ্রামীণ সড়ক নয়, এমন দশা হলদিয়া–মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের বেশ কয়েক কিলোমিটার এলাকায়।
কোলাঘাটে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলগামী ৫২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই জাতীয় সড়কের তমলুক, নন্দকুমার, হলদিয়া এলাকার বেশ কিছু জায়গায় যে ভাবে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে তাতে যে কোনও মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। হলদিয়া শিল্পাঞ্চল থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার পণ্যবাহী লরি, তেল, গ্যাস ট্যাঙ্কার চলাচল করে। তা ছাড়া এই সড়কে যাতায়াত করে হলদিয়া ও দিঘা থেকে যাত্রীবাহী সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন রুটের বাস।
এই সড়কে নিয়মিত যাতায়াত করেন এমন গাড়ি চালকদের অভিযোগ, বিভিন্ন জায়গায় অস্থায়ীভাবে কিছুদিন আগে মেরামতি করা হলেও সম্প্রতি ভারী বৃষ্টিতে ফের বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাঁরা নিয়মিত এই সড়কে যাতায়াত করনে না তাঁদের কাছে এটা আরও বেশি বিপজ্জনক। অবিলম্বে এর মেরামতি দরকার।’’ সোমবার ওই জাতীয় সড়ক ঘুরে দেখা গেল তমলুকের রাধামণি বাজার পেরিয়ে হলদিয়া যাওয়ার পথে কাকগেছিয়ার কাছে সড়কে একাধিক বড় বড় গর্ত। নিমতৌড়ি পেরিয়ে নন্দকুমারের দিকে দক্ষিণ নারিকেলদা, কামারদা, হাঁসগেড়িয়া, ইড়খা এবং খঞ্চি বাজারের কাছেও তৈরি হয়েছে গর্ত। ইড়খার কাছে সড়কের দু’দিকের লেনেই একাধিক বড় বড় গর্ত হওয়ায় মালবাহী লরিগুলি যাতায়াতের সময় ঝাঁকুনির শব্দে কান পাতা দায় বলে সড়ক লাগোয়া এলাকার মানুষের অভিযোগ।
হলদিয়ার একটি কারখানা থেকে ভোজ্য তেল নিয়ে নিয়মিত কলকাতায় যাতায়াত করেন লরিচালক সুরেশ যাদব। তাঁর অভিযোগ, ‘‘সড়ক রক্ষণা-বেক্ষণের জন্য মোটা টাকা ‘টোল’ আদায় করা হচ্ছে। কিন্তু সড়ক নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না। বৃষ্টির জেরে রাস্তায় বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। সড়কের বেশকিছু এলাকা এখন গাড়ি চালানোর পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। রাতে তো গাড়ি চালানো আরও বেশির ঝুঁকির হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কলকাতা আঞ্চলিক জেনারেল ম্যানেজার (টেকনিক্যাল) অজিতকুমার সিংহ বলেন, ‘‘সম্প্রতি ভারী বৃষ্টির জেরে হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছ। এটা আমাদের নজরে এসেছে। ক্ষতিগ্রস্ত ওই অংশ দ্রুত মেরামত করে দেওয়া হবে।’’