ঘায়েল: চিতি সাপ দেখাচ্ছেন এক কর্মী। নিজস্ব চিত্র
বৃহস্পতিবার সকালে অফিসে ঢোকার সময় সামনের বাগানে সাপের খোলস নজরে পড়েছিল অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বুদ্ধেশ্বর মণ্ডলের। কর্মীদের ডেকে সাবধান করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, ‘‘দেখে চলাফেরা করুন। সাপ থাকতে পারে।’’
তারপর অফিসে ঢুকে দেওয়াল আলমারি খুলে ফাইল বের করতে গিয়ে এক কর্মী দেখেন, আলমারির নীচের তাকের কোণে কিছু একটা রয়েছে। টর্চের আলো ফেলতেই সকলের চক্ষু চড়ক গাছ। ফাইলের খাঁজে রয়েছে ছোট দু’টি চিতি সাপ। এরপর নিজের ঘরের দেওয়াল আলমারি তল্লাশি করতে গিয়ে আঁতকে ওঠেন বুদ্ধেশ্বরবাবু নিজেও। তাঁর ব্যবহৃত দেওয়াল আলমারিতেও ফাইলের সাথে দিব্যি শুয়ে রয়েছে আরও একটি চিতি সাপ।
মেদিনীপুর শহরের রাঙামাটিতে আবাসন দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের অফিসে এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কার্বলিক অ্যাসিড, লাঠি এনে প্রথমে একসঙ্গে পাওয়া সাপ দু’টিকে আলমারির মধ্যেই মেরে ঘায়েল করা হয়। পরে বুদ্ধেশ্বরবাবুর আলমারির সাপটিকেও মারা হয়েছে।
একই দিনে অফিসের দু’টি দেওয়াল আলমারি থেকে তিনটি সাপ বেরোনোয় কর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। আবাসন দফতরের এই অফিসটি রয়েছে রাঙামাটির ফাঁকা জায়গায়। প্রতি বর্ষায় অফিসের বাগান আগাছায় ভরে যায়। সেখানে সাপেরও দেখা মেলে। ওই অফিসের কর্মী রণজিৎ বিশুই বলেন, ‘‘গত বছরও একটি আলমারি থেকে দু’টি সাপ বেরিয়েছিল। সন্ধের পরেই অফিসের সিড়ির নীচে, উঠোনে, বাগানে বিষাক্ত খরিশ ও চিতি সাপ ঘুরে বেড়ায়। আমরা ভয়ে থাকি।’’ অফিসের আর এক কর্মী সুখেন্দু খানের অভিযোগ, ‘‘পুরসভা থেকে এই এলাকা পরিষ্কার করা হয় না, ব্লিচিং ছড়ানো হয় না। তাই এখানে সাপের বাড়বাড়ন্ত।’’
মেদিনীপুরের উপ-পুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাসের অবশ্য দাবি, ‘‘পুরসভার সব এলাকাই নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। তবে অফিসের ভেতরের অংশ সাফাই করা পুরসভার দায়িত্ব নয়।’’ অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বুদ্ধেশ্বরবাবু জানিয়েছেন, আজ, শনিবারই অফিসের চারপাশ পরিষ্কার করা হবে। ছড়ানো হবে কার্বলিক অ্যাসিড ও ব্লিচিং পাউডার।