বয়স বেড়েছে টম আর জেরির। হাট্টিমাটিমটিম-কে চেনেই না এখনকার ছোটরা!
তাই তাদের নিয়ে হাজির হচ্ছে গিধনি স্পোর্টিং ক্লাব। তবে সঙ্গে থাকছে একালের মোটু-পাতলু বা ছোটা ভীমও। ছোটবেলার গন্ধ মাখা থিম নিয়ে উৎসাহ কম নয়। তাই সুযোগ বুঝে সচেতনতার বার্তা রেখে দিয়েছেন উদ্যোক্তারা। তবে সেখানেও কাজ করছে নস্টালজিয়া। মণ্ডপ প্রাঙ্গণে স্পাইডারম্যানের হাতে নিকেশ হচ্ছে ব্লু-হোয়েল। বাঁশ, প্লাইউড, থার্মোকল, তুলো, কাগজ, কাপড় আর রং মিশিয়ে তৈরি হয়েছে এক আশ্চর্য জগৎ— ছোটদের জন্য।
ঝাড়গ্রাম জেলার গিধনিতে দু’টি পুজো ঘিরে মানুষের বরাবরের উৎসাহ— স্পোর্টিং ক্লাব আর পূর্বাশা। বড় বাজেটের এই দুই পুজো এ বলে আমায় দেখ, তো ও বলে আমায় দেখ। এ বারও তার ব্যতিক্রম নয়। তাই স্পোর্টিং ক্লাব যেখানে ফিরিয়ে আনতে চাইছে হারানো শৈশব, পূর্বাশা দেখাচ্ছে হারিয়ে যাওয়া বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য। ১৭ তম বর্ষে পূর্বাশার থিম ‘সৃষ্টি সুখের উল্লাসে’।
শিবমন্দির পাড়ার গিধনি স্পোর্টিং ক্লাবের পুজো এ বার ৭৩ বছরে পড়ল। ক্লাব সদস্য বিশ্বজিৎ ঘোষ, সুমন প্রতিহার, অমিত দাসদের কথায়, পড়াশোনার চাপে ছোটদের খেলাধুলো আর বিনোদনের জগৎ সঙ্কুচিত। বদলেছে বিনোদনের মাধ্যম। তাই এমন থিমের ভাবনা। ছোটদের দুনিয়ায় এসে বড়রাও ছোটবেলার আনন্দ অনুভূতি পাবেন। রূপায়ণে রয়েছেন বাঁকুড়ার শিল্পী সিদ্ধার্থ মুদি।
পূর্বাশার মণ্ডপ কেঁচোর ঢিবির আদলে। সেখান থেকে বেরিয়ে পড়ছে অজস্র কেঁচো। ইনস্টলেশন আর্টের মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া ডাইনোসর, ডোডো পাখি, শকুন, বিভার থেকে বিপন্ন প্রাণী ও সরীসৃপদের চমক লাগানো উপস্থিতি। পাশাপাশি থাকছে জৈব সার আর অজৈব সার প্রয়োগের সুফল ও কুফলের উপস্থাপনাটিও চমকপ্রদ। দেবী প্রতিমাও যেন কাঁচা মাটির— রংহীন। পুজো কমিটির সদস্য শান্তনু রায়, শোভন মাহাতোরা বলেন, রাসায়নিক সার ব্যবহার করে নিজেদের অজান্তেই আমরা কী ভাবে জীববৈচিত্রের ধ্বংস করে ফেলছি, সেটাই থিমের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে। শালবাগান পাড়ায় পূর্বাশা ক্লাবের পুজোর থিম রূপায়ণে রয়েছেন ক্লাব সদস্য শিল্পী তপন মাহালি।
দু’টি ক্লাবের নজরকাড়া থিম দেখতে প্রতি বছর গিধনিতে উপচে পড়ে ভিড়। এ বারও লক্ষাধিক জনসমাগমের প্রত্যাশা করছেন দু’টি পুজো কমিটির উদ্যোক্তারাই।