বন্ধ: স্কুলের রান্নাঘরের দরজায় তালা ঝোলানো। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতির দ্বন্দ্বে বন্ধ হয়ে গিয়েছে মিড ডে মিল। প্রায় এক সপ্তাহ বঞ্চিত পড়ুয়ারা। ঘটনায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা।
দাসপুরের রানিচক দেশপ্রাণ হাইস্কুলের ঘটনা। পরিস্থিতির দ্রুত ফয়সালা চাইছেন এলাকার বাসিন্দারাও। প্রধান শিক্ষিকা বিদুষী বারুই মান্না বলেন, “সভাপতি চেকে সই না করায় টাকা তোলা যাচ্ছে না। ফলে বাজারে বহু টাকা ধার হয়ে গিয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে প্রকল্পটি বন্ধ করেছি।”
স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি বিজয় ভৌমিক বললেন, ‘‘আমাকে হিসাব দেখানো হয়নি। তাই চেকে সইও করিনি। আমার কথা না শুনলে কাউকে ছাড়ব না।” কিন্তু স্কুল পড়ুয়ারা বঞ্চিত হচ্ছে, সে প্রশ্নে বিজয়বাবু জবাব, “আমার কিছু করার নেই।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছ, দীর্ঘ আট-দশ মাস ধরেই মিড-ডে মিল-সহ নানা কারণে সভাপতির সঙ্গে প্রধান শিক্ষিকার সংঘাত চলছে। জরুরি বৈঠক, উন্নয়ন সংক্রান্ত আলোচনা শিকেয় উঠেছে। স্কুল সূত্রের খবর, সভাপতি চেয়েছিলেন মিড-ডে মিলের খরচ বাবদ প্রতি মাসের টাকা ব্যাঙ্ক থেকে তুলে রান্নার কাজে যুক্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের হাতে তুলে দিতে।
এতদিন ওই নিয়মেই রানিচক দেশপ্রাণ হাইস্কুলে মিড-ডে মিল চলছিল। কিন্তু গত বছর জুলাই মাসে বিদুষীদেবী প্রধান শিক্ষিকা হিসাবে যোগ দেওয়ার পরই ওই নিয়ম ভেঙে দেন। প্রকল্পের নিয়ম মেনে শিক্ষকদের নজরদারিতেই শুরু হয় রান্না। খরচের দৈনন্দিন হিসাব স্কুল কর্তৃপক্ষই রাখতে শুরু করেন। খরচের নথি বিডিও অফিসে জমাও দেন। বিডিও সংশ্লিষ্ট স্কুলের অ্যাকাউন্টে টাকা পঠিয়ে দেন।
ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্কুল শিক্ষকদের একাংশও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক বলেই ফেললেন, ‘‘সভাপতি নিজের স্বার্থে এই বেআইনি আবদার করছেন। এটা মেনে নেওয়া যাবে না।’’
এ প্রসঙ্গে দাসপুর-২ বিডিও বিট্টু ভৌমিক বললেন, “যাতে দ্রুত স্কুলে মিড ডে মিল চালু হয়-তার নির্দেশ দিয়েছি। আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।” জেলা স্কুল পরিদর্শক অমর কুমার শীল বলেন, “মিড ডে মিল বন্ধ করা যাবে না। আমি খোঁজ নিচ্ছি।”