সুপ্রিয়াকে সবুজসাথীর সাইকেল দিল সঞ্জনা। নিজস্ব চিত্র
ফের মানবিকতার নজির। বেলদার পরে এ বার শালবনির স্কুলে। সবুজসাথী প্রকল্পে পাওয়া সাইকেল স্কুলেরই এক দুঃস্থ ছাত্রীকে দিয়ে দিল আর এক ছাত্রী। নতুন সাইকেল পেয়ে বেজায় খুশি পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী সুপ্রিয়া বড়দোলই। সুপ্রিয়াকে সাইকেল দিয়েও খুব খুশি নবম শ্রেণির সঞ্জনা মোদক। সঞ্জনা বলছিল, “মনে হচ্ছে ভাল একটা কাজ করলাম। সুপ্রিয়া আরও ভাল করে পড়াশোনা করুক, আরও বড় হোক, এটাই চাইছি।’’ আর সুপ্রিয়া বলছিল, “সঞ্জনাদির কথা চিরদিন মনে থাকবে। সাইকেলটা পেয়ে খুব সুবিধে হল।’’
সোমবার এই ঘটনার পরে শালবনির নিচুমঞ্জরি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা বাসবী ভাওয়াল বলছিলেন, “নবম শ্রেণির ওই ছাত্রীর উদ্যোগে আমরা সকলে আনন্দিত। এই বয়সে এমন উদারতা সত্যিই প্রশংসাযোগ্য। এটা একটা নজির হয়ে থাকল।’’
ছোট থেকেই অভাবে সংসারেই বেড়ে ওঠা সুপ্রিয়ার। চাষবাস করে সংসার চলে। বাড়ি শালবনির বীরভানপুরে। সেখান থেকে হেঁটেই স্কুলে আসতে হয় পঞ্চম শ্রেণির এই ছাত্রীকে। এতটা পথ যাতায়াতে অসুবিধে যে হয় না তা নয়, তবে তা সয়ে গিয়েছে। আর সঞ্জনার বাড়ি শালবনি সদরের অদূরে। তার নিজের সাইকেল রয়েছে। কখনও পরিজনেরা তাকে মোটরবাইকেও স্কুলে ছেড়ে দিয়ে যান। তাই সবুজসাথীর সাইকেল পেয়ে সুপ্রিয়াকে দেবে বলে ঠিক করে সঞ্জনা। পরিজনেরাও আপত্তি করেননি।
সঞ্জনার বাবা পেশায় সব্জি বিক্রেতা সেন্টু মোদকের কথায়, “আপত্তির প্রশ্নই ছিল না। মেয়ের কথা শুনে বরং নিজের গর্বই হচ্ছিল।’’ সুপ্রিয়ার মা সুজলা বড়দোলই বলছিলেন, “আমার তিন মেয়ে। আজ যেন আরও একটি মেয়ে পেয়ে গেলাম।’’ এর আগে বেলদার আসন্দা শিক্ষা নিকেতনেও এমন ঘটনা ঘটেছে। শালবনি নিচুমঞ্জরি স্কুলের এক সহ- শিক্ষিকা বলছিলেন, “এ ভাবে যদি ছাত্রীরা একে অপরের পাশে দাঁড়ায়, সাহায্য করে, তাহলে অনেকেই আরও এগোতে পারে।’’