দেবদ্বৈপায়ন পাল
টেস্টে নম্বর ছিল ৪৬০। উচ্চ মাধ্যমিকে সেটা বেড়ে যে ৪৮৩ হবে ভাবতেই পারেনি খড়্গপুর-২ ব্লকের তেলিপুকুর গ্রামের দেবদ্বৈপায়ন পাল। তেলিপুকুর হাইস্কুলের এই ছাত্রই উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে দশম হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সে-ই সেরা। তবে এত আনন্দের মধ্যেও রসায়নে ৯২ নম্বর পাওয়াটা মেনে নিতে পারছে না সে। তার আক্ষেপ, ‘‘রসায়নে আরও ৪ নম্বর পাব ভেবেছিলাম।’’
মাধ্যমিকে প্রথম কুড়িতে থাকা এই ছাত্র একাদশে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে ভর্তি হয়েছিল। কিন্তু মন বসেনি। ফের ফিরে এসেছিল নিজের পুরনো স্কুলেই। ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চাওয়া দেবদ্বৈপায়ন বলল, “আমার সাফল্যের পিছনে বাবা-মা ছাড়াও জেঠু-জেঠিমার অবদান যথেষ্ট। আর স্কুলের অবদানও ভুলতে পারব না। আজ মনে হচ্ছে নরেন্দ্রপুরে গিয়েও ফিরে আসার সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল।’’
দেবদ্বৈপায়নের গৃহশিক্ষক ছিল অঙ্ক ও জীববিদ্যায়। বাকি বিষয়ে স্কুলের শিক্ষকদের কাছেই আলাদা করে পড়েছে সে। তাতেই বাংলায় ৯২, ইংরেজিতে ৯৭, অঙ্কে ১০০, পদার্থবিদ্যায় ৯৮, জীববিদ্যায় ৯৬ ও রসায়নে ৯২ নম্বর এসেছে।
দেবদ্বৈপায়নের বাবা সুজিত পালের ছোট হার্ডওয়্যারের দোকান। মা উমা পাল গৃহবধূ। কৃতী এই ছাত্রের জেঠু তেলিপুকুর হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অজিতকুমার পাল ও জেঠিমা নীলিমা পালও অত্যন্ত খুশি। অবসরে ছবি আঁকা, রবীন্দ্রসঙ্গীত ও ফেলুদার গল্প এই কৃতী ছাত্রের সঙ্গী। তার চিকিৎসক হওয়ার জেদ চেপেছে বন্ধু অঙ্কন পাল ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পরে। দেবদ্বৈপায়নের কথায়, ‘‘ভবিষ্যতে চিকিৎসক হয়ে অঙ্কনদের মতো ক্যান্সারে আক্রান্তদের সুস্থ করার চেষ্টাই করব।’’ দেবদ্বৈপায়নের স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্রীকান্ত মিশ্র বলেন, “আমাদের স্কুলের ফল জেলায় বরাবর ভাল হয়। তবে দেবদ্বৈপায়নের স্কুলকে রাজ্যস্তরে পৌঁছে দিল। আমরা ওঁর আরও উন্নতি কামনা করি।’’