দুর্গাচকের অফিসে শুভেন্দু। নিজস্ব চিত্র
২০১২ সালে ভোটাররা ভুল করেছিলেন, এ বার আর করবেন না—রবিবার ভোট পর্বে মেটার আগেই আত্মবিশ্বাস ঝরে পড়ল শুভেন্দু অধিকারীর গলায়।
সকাল সাড়ে ৮টা হলদিয়ার মহাপ্রভুচক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৫১ নম্বর বুথে নিজের ভোটটি দিয়ে আসেন তিনি। তারপর সারাদিন কাটিয়েছেন দুর্গাচকের কার্যালয়ে। তিনটি মোবাইল বেজেছে ক্রমাগত। হাতের তালুতে রেখে দিয়েছেন গোটা হলদিয়ার ভোট চিত্র। দিনের শেষে বলে গিয়েছেন, ‘‘আমি রিল্যাক্সড। গত পুরসভায় হেরে যন্ত্রণাবিদ্ধ হয়েছিলাম। আজ ঘুমবো।’’
রবিবার সারাদিনই রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর বডি ল্যাঙ্গুয়েজে ঝরে পড়েছে আত্মবিশ্বাস। হলদিয়ার ভোটই যে পাখির চোখ, তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন সাংবাদিকদের। মুখে বলেছেন, ‘‘হলদিয়ার উন্নয়নের জন্য পুরসভায় আমাদের জেতাটা জরুরি।’’ শুধু অফিসে বসেই নয় নিজের গাড়িতে ঘুরে বেড়িয়েছেন চিরঞ্জীবপুর, দুর্গাচক, সুতাহাটা, ব্রজলাল চক হয়ে রায়রায়াচক। রাস্তার ধারে দলীয় ক্যাম্পে নেমে খোঁজ নিয়েছেন, কোথাও খোশগল্প করেছেন। চা খাওয়া, সেলফি তোলা— বাদ যায়নি কিছুই।
আবার অফিসে বসে ফোন করেছেন পুলিশের কাছেও। দলীয় কোন্দলে পাঁশকুড়ার একটি ওয়ার্ডে শুরু হয়েছিল ঝামেলা। ‘‘র্যাফ নিয়ে গিয়ে বুথ ফাঁকা করুন, মানুষকে ভোট দিতে দিন’’, নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। জেলা পরিষদের সভাধিপতি মধুরিমা মণ্ডল, সহ-সভাপতি শেখ সুফিয়ানের কাছে প্রতিটি ওয়ার্ডের খোঁজ নিয়েছেন।
২০১২ সালে হলদিয়া পুরভোটে ক্ষমতা দখল করেছিল বামেরা। চেয়ারম্যান হয়েছিলেন সিপিএমের তমালিকা পণ্ডাশেঠ। পরে অবশ্য দলবদলে অনেক কাউন্সিলরই তৃণমূলে আসেন। ফলে বদলে যায় ক্ষমতার সমীকরণ। কিন্তু ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ফের জয়ী হন সিপিএম প্রার্থী তাপসী মণ্ডল। তারপর থেকেই শাসক তৃণমূলের কাছে হলদিয়ায় সম্মানের লড়াই।
সে কথাই শোনালেন মন্ত্রী, ‘‘২০১২ সালে দলীয় কর্মী সমর্থকদের কাছ থেকে সব সময় সঠিক তথ্য পাইনি। তাই সেই ভুল এ বার আর করিনি। নিজে হলদিয়ার ভোটার হওয়ায় হাতের তালুর মত করে চিনেছি।’’ তাঁর দাবি, প্রার্থী নির্বাচনেই তৃণমূল বিরোধীদের টেক্কা দিয়ে ফেলেছে।
মোবাইল ফোনে এসেছে বিরোধিদের নানা অভিযোগের খবরও। তবে ‘রিল্যাক্সড’ শুভেন্দু নির্লিপ্ত ভাবে বলেছেন, ‘‘এ সব অভিযোগ আসবে জানতাম। ভোটে বিরোধীরা অভিযোগ করবেই। কর্মীদের বলেছি মাথা ঠান্ডা রাখতে।’’