বাম-সৌজন্যের প্রশংসায় শুভেন্দু

মেদিনীপুর শহর ক্লাব সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে শনিবার বিকেলে শহরে বিজয়া সম্মিলনীতে এসেছিলেন শুভেন্দু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২০ ০০:২৫
Share:

বক্তা: মঞ্চে শুভেন্দু। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

তাঁর আগামী রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জল্পনার শেষ নেই। পরিবর্তিত এই পরিস্থিতিতে মেদিনীপুরে এসে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী মনে করিয়ে দিলেন, মেদিনীপুর রত্নগর্ভা। এখানে বহু কৃতী মানুষের জন্ম। বিদ্যাসাগর, ক্ষুদিরাম থেকে অধ্যাপক মণিলাল ভৌমিক, চিত্রশিল্পী পরেশ মাইতির পাশাপাশি সুকুমার সেনগুপ্তের মতো বাম নেতার নামও শোনা গেল শুভেন্দুর মুখে। বললেন, বাম রাজনীতিকদের সৌজন্যের ধারা এখনও অব্যাহত।

Advertisement

মেদিনীপুর শহর ক্লাব সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে শনিবার বিকেলে শহরে বিজয়া সম্মিলনীতে এসেছিলেন শুভেন্দু। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমার পরিচয় আমি মেদিনীপুরের অধিবাসী। মেদিনীপুর রত্নগর্ভাই থেকে গিয়েছে। এখানে অভাব, দারিদ্র্য, বেকারত্ব রয়েছে। এখানে মেধাও রয়েছে। সেই মেধা এবং লুক্কায়িত প্রতিভাকে বিকশিত করতে হবে।’’ মেদিনীপুর যে রাজনৈতিক সঙ্কীর্ণতার ঊর্ধ্বে সে কথা বলতে গিয়েই তাঁর মুখে সিপিএম নেতাদের সৌজন্যের প্রশংসা শোনা যায়। তাঁর বার্তা, অতীতে সুকুমার সেনগুপ্তরা যে সৌজন্য দেখিয়েছেন, এখনও কীর্তি দে বক্সীরা তা দেখান। কীর্তি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সিপিএমের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। শুভেন্দু বলেন, ‘‘অবিভক্ত মেদিনীপুরের বিশিষ্ট ব্যক্তি যাঁরা, তাঁদের অনেকেই আমার পরিবারে গিয়েছেন। মেদিনীপুরে যে সঙ্কীর্ণ রাজনীতি নেই, একটা উদাহরণ দিলে বুঝতে পারবেন। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত এসেছিলেন। তখন ছাত্র রাজনীতি করি। আমরা একটা প্রতিবাদ মিছিল করেছিলাম। তাতে কিছু অশান্তি হয়েছিল। আমাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। পুলিশ মধ্যরাতে আমার বাড়িতে তল্লাশিতে গিয়েছিল। প্রবাদপ্রতিম স্বাধীনতা সংগ্রামী, বামপন্থী আন্দোলনের প্রণম্য নেতা সুকুমার সেনগুপ্ত তখন বহুল প্রচারিত খবরের কাগজে বলেছিলেন, ‘অধিকারী পরিবার রাজনৈতিক পরিবার। শুভেন্দু সম্ভাবনাময় তরুণ। এই ভাবে মধ্যরাতে তাঁর বাড়িতে পুলিশের তল্লাশিতে যাওয়া উচিত হয়নি।' এটাই হল আমাদের একতা।’’ তিনি জুড়েছেন, ‘‘দলমত নির্বিশেষে আমরা এক হয়ে মেদিনীপুরবাসী চলি।’’ রাজনৈতিক মহলের মতে, বাম কর্মী-সমর্থকদের মন ছোঁয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি। এর পিছনে আগামী দিনের পরিকল্পনাও থাকতে পারে।

এ দিন শুভেন্দুর বক্তব্য জুড়ে ছিল মেদিনীপুর। তিনি মেদিনীপুরেরই ভূমিপুত্র। মন্ত্রীর থেকে এই পরিচয়ে তিনি বেশি স্বচ্ছন্দ। তারপর স্বামী বিবেকানন্দের নীতি-আদর্শ মনে করিয়ে ক্লাব সমন্বয় কমিটির প্রতি শুভেন্দুর বার্তা, ‘‘আপনারা সংগঠিত হন। স্বামীজী যে একশোজন যুবক খুঁজছিলেন, সেই রকম আদর্শবান যুবকদের আপনারা সংগঠিত করুন। আমি পাশে থাকব।’’

Advertisement

অনুষ্ঠানস্থলের আশপাশে ‘আমরা দাদার অনুগামী' লেখা সম্বলিত হোর্ডিং ছিল। ক্লাব সমন্বয় কমিটির সভাপতি, তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক স্নেহাশিস ভৌমিক বলেন, ‘‘আমরা শহরের ক্লাবগুলিকে নিয়ে এই কমিটি করেছি। মানুষের পাশে থাকতে আমাদের এই উদ্যোগ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন