রকমারি: ভাইফোঁটার মিষ্টি কেনার ভিড়। ছবি: কিংশুক আইচ
উৎসবের মরসুমে কব্জি ডুবিয়ে খাওয়া ও মিষ্টিমুখ বাঙালির ঐতিহ্য। আর ভাইফোঁটার অনুষ্ঠানে দাদা বা ভাইয়ের পাতে মিষ্টি থাকবেই। দিদি বা বোনকেও উপহারের সঙ্গে দিতেই হবে এক বাক্স মিষ্টি।
আজ, শনিবার ভাইফোঁটা। শুক্রবার থেকেই তাই শহর মেদিনীপুরের মিষ্টির দোকানগুলোয় হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে। হরেক রকমের মিষ্টিতে ভরে উঠেছে দোকানের শোকেস। ভাইফোঁটা স্পেশাল মিষ্টিও রয়েছে। মিষ্টি ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এই সময়ে সন্দেশের একটা ভাল চাহিদা থাকে। তাই নানা ধরনের সন্দেশ তৈরি হয়। এ বার যেমন বাটার স্কচ সন্দেশ, আঙুর সন্দেশ, পদ্ম সন্দেশ, আমসত্ত্ব সন্দেশের চাহিদা বেশি। আঙুর সন্দেশের মধ্যে আস্ত একটা আঙুর রয়েছে। পদ্ম সন্দেশ দেখতে পদ্ম ফুলের পাপড়ির মতো। আর আমসত্ত্ব সন্দেশের উপরে আছে আমসত্ত্বের আস্তরণ। পাশাপাশি, ভাইফোঁটা লেখা বড় সন্দেশ তো রয়েছেই।
মিষ্টির উপরেও জিএসটি লাগু হয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানালেন, মিষ্টিতে ৩-৪ রকমের জিএসটি লাগু করা হয়েছে। নোনতা সিঙ্গাড়া বা কচুরির উপর ১২ শতাংশ জিএসটি লাগু হয়েছে। মিষ্টি শিল্পের সমস্ত কাঁচামাল যেমন চিনি, ডালডা, তেল, মশলা সামগ্রী, এমনকী মিষ্টি দেওয়ার প্যাকেটের ওপরও জিএসটি লাগু হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই মিষ্টির দাম কিছুটা বেড়েছে। অবশ্য এর প্রভাব ভাইফোঁটার মিষ্টির বাজারের ওপর পড়েনি। মিষ্টি যেমন বিক্রি হত, তেমনই বিক্রি হচ্ছে। শহরের মিষ্টি ব্যবসায়ী রাজীব দে-র কথায়, “ভাইফোঁটার সময় বিশেষ ধরনের কিছু সন্দেশ বানানো হয়। এ বারও ক্রেতারা সে সব পছন্দ করছেন।’’ রাজীব জানালেন, নানা মাপের জলভরা সন্দেশরও যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।
শুক্রবার দিনভর মেদিনীপুরে বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যেই অবশ্য পাড়ার মোড়ের সাধারণ দোকানগুলোয় মিষ্টি কেনার ভিড় নজরে এসেছে। সকলেই চাইছেন, ‘স্টক’ ফুরনোর আগে পছন্দের মিষ্টিটা ঘরে নিয়ে যেতে। শহরের বাসিন্দা সায়ন্তী মান্নার কথায়, “বাড়িতে ভাইয়েরা আসে। আয়োজনে কিছু কম করলেই মনটা খারাপ হয়ে যায়। দাম একটু বেশি হলেও মিষ্টি নিতেই হবে।” ফাল্গুনী প্রধান আবার বলেন, “শনিবার সকালে দোকানে মিষ্টি থাকবে কি থাকবে না, তাই এ দিনই কিনে নিয়েছি।’’ কুইকোটার এক দোকানে এসেছিলেন সোমা মাইতি। তাঁরও বক্তব্য, “ভাইফোঁটার দিন সকাল থেকে মেদিনীপুরের মিষ্টি দোকানগুলোয় যা ভিড় হয়, তাতে আগে থেকে না এলে খালি হাতেই ফিরতে হয়।”
ছানার মিষ্টির চাহিদাই বেশি। রকমারি রসগোল্লাও বিক্রি হচ্ছে। বেক্ড রসগোল্লার দাম ১৫ টাকা, মালাই কোপ্তা ১৫ টাকা, কেশর চমচম ১০ টাকা, বাটার স্কচ সন্দেশ ১৭ টাকা। ছোট রসগোল্লা ৫ টাকা, বড় যথাক্রমে ১০, ২০ টাকা। অষ্টম মণ্ডল, মেঘনাদ বাগের মতো মিষ্টির কারিগরের কথায়, “এই সময়ে শৌখিন মিষ্টির চাহিদা থাকে। তবে ট্র্যাডিশনাল মিষ্টির ক্রেতাও কম নেই। তাই রসগোল্লা, পান্তুয়াও তৈরি করতে হয়।’’