মা-দাদাকে খুনের দায়ে ফাঁসির রায়

মা, দাদা-বউদিকে খুন করার পরে সাড়ে তিন বছরের ভাইঝিকেও একই ভাবে কুপিয়ে মেরেছিলেন দেবব্রত দাস। তারপর রক্তাক্ত চপারটা পকেটে নিয়ে চলে গিয়েছিলেন পাশের গ্রামে বোনের কাছে। নির্বিকার গলায় জানিয়েছিলেন, ‘সব ক’টাকে নিকেশ করে এলাম।’ সেই খুনেরই সাজা ঘোষণা হল বুধবার। মঙ্গলবারই পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৫ ০৪:১৯
Share:

দেবব্রত দাস

মা, দাদা-বউদিকে খুন করার পরে সাড়ে তিন বছরের ভাইঝিকেও একই ভাবে কুপিয়ে মেরেছিলেন দেবব্রত দাস। তারপর রক্তাক্ত চপারটা পকেটে নিয়ে চলে গিয়েছিলেন পাশের গ্রামে বোনের কাছে। নির্বিকার গলায় জানিয়েছিলেন, ‘সব ক’টাকে নিকেশ করে এলাম।’
সেই খুনেরই সাজা ঘোষণা হল বুধবার। মঙ্গলবারই পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। এ দিন তার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (তৃতীয়) সুজয় সেনগুপ্ত। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এই প্রথম কোনও মামলায় ফাঁসির আদেশ শোনাল তমলুক আদালত। ঘটনাটি ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারির। দেবব্রতর আক্রমণে খুন হন তার দাদা অনুকূল দাস (৪৮), বৌদি মৌমিতা (৩২), বৃদ্ধা মা ঊর্মিলাদেবী (৬২) এবং সাড়ে তিন বছরের ভাইঝি মৌশ্রী। পরে ভগ্নিপতির কাছে অপরাধ স্বীকার করতেও কসুর করেননি দেবব্রত। পুলিশের হাতে নিজেই তুলে দিয়েছিলেন খুনের অস্ত্র।
গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যের অভিযোগের ভিত্তিতে কাঁথি থানার পুলিশ অভিযুক্ত দেবব্রতকে খড়িপুকুর গ্রামে বোনের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করে। বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে অভিযুক্ত দেবব্রতর নিজের দিদি ও ভগ্নিপতি গোপন জবানবন্দিও দিয়েছিলেন। এ ছাড়াও সাক্ষ্য দিয়েছেন আরও ১৫ জন। ২০১৪ সালের ১১ অগস্ট আদালতে চার্জ গঠন হয়।
সরকার পক্ষের আইনজীবী উত্তরসখা বেরা জানান, ‘‘পারিবারিক বিবাদে মা, দাদা, বৌদি ও ভাইঝিকে খুন করেছিল ওই যুবক। শুনানির পর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সুজয় সেনগুপ্ত দেবব্রতকে মঙ্গলবারই দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন।’’ কাঁথির মুকুন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা অবন্তী দাস অসুস্থতার কারণে সরকারি চাকরি থেকে স্বেচ্ছাবসর নিলে তাঁর বড়ছেলে অনুকূল চাকরিটা পেয়েছিলেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে অশান্তির সূত্রপাত সেই থেকে। একই বাড়িতে থাকলেও দুই পরিবারের মুখ দেখাদেখি ক্রমেই কমে এসেছিল বলে পড়শিরা জানিয়েছেন। শেষে বিবাদ প্রায়ই হাতাহাতিতে গড়াত। ওই দিনও বচসা থেকেই হাতের কাছে একটি চপার পেয়ে দাদা-বউদি-মা এমনকী ছোট্ট ভাইঝিকেও কুপিয়ে খুন করেন দেবব্রত।

Advertisement

রায় শোনার পরেও ওই যুবকের হেলদোল চোখে পড়েনি। নিস্পৃহ গলায় তিনি বলেন ‘‘আমি নির্দোষ।’’ তাঁর আইনজীবী সৌমেন সাহু জানান, এ দিনের রায়ের বিরুদ্ধে‌ তাঁরা উচ্চতর আদালতে আবেদন জানাবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন