চালকল মালিকদের সঙ্গে সরকারের টানাপড়েন কাটল। ফলে, সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনার ক্ষেত্রে আশার আলো পশ্চিম মেদিনীপুরে। আজ, সোমবার থেকেই জেলায় ধান কেনা শুরু করার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের জেলা নিয়ামক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “সোমবার থেকেই স্থায়ী কেন্দ্রগুলি থেকে ধান কেনা শুরুর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ধীরে ধীরে সমবায়ের মাধ্যমেও জেলা জুড়ে ধান কেনা শুরু হবে।”
অভাবী বিক্রি বন্ধে নভেম্বরের শেষ থেকেই ধান কেনার দাবি ওঠে। কারণ, ওই সময় পাকা ধান উঠতে শুরু করে। শুরু হয় আলু চাষ। আলু বীজ, সার কিনতে চাষিদের টাকার প্রয়োজন হয়। সরকার ঠিক সময়ে ধান কেনা শুরু না করলে চাষিরা কম দামে খোলাবাজারে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হন। এ বারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। তাই চাষিরা চাইছেন, যত দ্রুত সম্ভব সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু হোক।
এ বার সরকার দু’ধরনের সহায়ক মূল্য নির্ধারণ করেছে। স্থায়ী কেন্দ্রে কুইন্ট্যাল প্রতি ১৪৯০ টাকা ও কৃষি সমবায় সমিতিতে কুইন্ট্যাল প্রতি ১৪৭০ টাকা। আর খোলাবাজারে কুইন্ট্যাল প্রতি ১ হাজার টাকা থেকে ১১৭০ টাকার বেশি দাম ওঠেনি। এতদিন ওই দরেই ধান বিক্রিতে বাধ্য হচ্ছিলেন চাষিরা। প্রশাসন জানিয়েছে, সমস্যা মেটাতে অনেক আগেই ধান কেনার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু চালকল মালিকরা কিছু দাবি তুলে ধান নিতে অস্বীকার করেন। ধান কেনার জন্য চুক্তি করতেও রাজি হননি। তাতেই সমস্যা দেখা দেয়।
চালকল মালিকদের প্রধান দাবি ছিল, আগে বকেয়া টাকা মেটাতে হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরে চালকল মালিকদের সরকারের কাছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। তাছাড়া মাণ্ডি শ্রমিকের খরচ কুইন্ট্যাল প্রতি ১০ টাকা ৩৩ পয়সা থেকে ৪ টাকা ৩৭ পয়সায় নামিয়ে ছিল সরকার। পাশাপাশি কিছু চালকল কে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। পশ্চিম মেদিনীপুর রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জয়ন্ত রায় বলেন, “বর্তমানে সমস্যা কিছুটা মিটেছে। মাণ্ডি শ্রমিক খরচ বাড়িয়ে ১২ টাকা করা হয়েছে। দ্রুত বকেয়া মেটানোর আশ্বাস দিয়েছে সরকার। কালো তালিকায় থাকা চালকলগুলি এক মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় চাল দিলে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথাও জানিয়েছে সরকার। তাই আমরাও ধান নিতে প্রস্তুত।” ইতিমধ্যেই কয়েকটি চালকলের সঙ্গে চুক্তিও করেছে জেলা খাদ্য ও সরবরাহ দফতর।