প্রতীকী ছবি।
ডাম্পারের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক স্কুলশিক্ষকের। আর তার জেরেই রণক্ষেত্রের চেহারা নিল তমলুকের রাধামণি বাজার এলাকা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম তুহিনশুভ্র ভট্টাচার্য (৩৪)।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার সকালে বাইক চালিয়ে নন্দীগ্রামের থেকে তমলুক হয়ে রাজ্য সড়ক ধরে পাঁশকুড়ার দিকে যাচ্ছিলেন তুহিনবাবু। সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ জাতীয় সড়ক ও তমলুক পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কের সংযোগস্থলে হলদিয়া থেকে মেচেদাগামী একটি ডাম্পার তাঁর বাইকে ধাক্কা মারে। বাইক থেকে ছিটকে পড়ার পর তুহিনবাবুর মাথার উপর দিয়ে ডাম্পারের চাকা চলে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তুহিনবাবুর। তাঁর মাথায় হেলমেট ছিল। অভিযুক্ত চালক পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ধরা পড়ে যায় সোনাপেত্যা টোল প্লাজার কাছে।
এর পরেই ট্র্যাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে মৃতদেহ আটকে হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয়েরা। তমলুক থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করতে গেলে উত্তেজিত জনতা তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখায়। তাঁদের উপর আক্রমণও চালায়। দুই সড়কের সংযোগস্থলে থাকা ট্র্যাফিক পোস্টের ঘরে জনতা আগুন দিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। তমলুক দমকল কেন্দ্রের থেকে একটি ইঞ্জিন সেখানে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অবশেষে তমলুক, নন্দকুমার ও কোলাঘাট থানার পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) শিবপ্রসাদ পাত্র ও তমলুকের সার্কেল ইনস্পেক্টর বিশ্বজিৎ হালদার। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জাতীয় সড়ক অবরোধের জেরে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। শেষমেশ পুলিশের হস্তক্ষেপে দুপুর দেড়টা নাগাদ জনতাকে সরিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া জেলার কোতুলপুর এলাকার বাসিন্দা তুহিনবাবু নন্দীগ্রামের রামচক গোপালচক থার্ড পার্ট জালপাই হাইস্কুলে বাংলা পড়াতেন। স্কুলের কয়েক কিলোমিটার দূরে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন তিনি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক তরুণকুমার মান্নার কথায়, “চার বছর আগে স্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন তুহিনবাবু। এ দিন বাঁকুড়া যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর।” এই দুর্ঘটনা বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “দুর্ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ট্র্যাফিক পুলিশের কোনও গাফিলতি ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”