কিশোরী পরিচারিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে সোমবারই বাড়ির মালিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার তমলুক জেলা হাসপাতালে বছর ষোলোর ওই কিশোরীর দেহ ময়না-তদন্ত করা হয়। ধৃতকে এ দিন হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে চার জন লোক ওই ব্যক্তির বাড়িতে আসে। তাঁরা সকলেই ধৃতের বন্ধু। বসে মদের আসর। ওই কিশোরীকে দোকান থেকে পাঁচটি পান কিনে আনতে বলে অভিযুক্ত ব্যক্তি। পান কিনে ফিরে আসার পর ওই কিশোরী পরিচারিকা রান্নাঘরে যায়। তারপরেই বাড়ির মালিক চার বন্ধুকে নিয়ে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, ওই কিশোরীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। তারপর শরীরের নিম্নাঙ্গ অ্যাসিড দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। দেহটি শৌচাগারে ফেলে রাখা হয়। চারপাশে ছড়িয়ে দেওয়া হয় কোরোসিন। ওই কিশোরী গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেছে, অভিযুক্তেরা এটাই প্রমাণের চেষ্টা করছিল বলে পুলিশের ধারণা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিয়ারই বাসিন্দা ওই কিশোরী তিন হাজার টাকা বেতনে ওই ব্যক্তির বাড়িতে কাজ করত। প্রতিদিন কাজ শেষে বাড়ি ফিরত সে। সোমবার দুপুর ১২টা নাগাদ তার বাড়ি ফেরার কথা ছিল। সেই সময়ই মেয়েটির মামা, তার মাকে ফোন করে জানায় একটা সমস্যার কারণে সে বাড়ি ফিরতে পারছে না। খবর পেয়ে মেয়েকে আনতে যান ওই মহিলা। মেয়েটির মায়ের অভিযোগ, ওই ব্যক্তির বাড়ি গিয়ে দেখা যায় বাড়ির শৌচাগারে মেয়েটির অর্ধদগ্ধ দেহ পড়ে রয়েছে। সোমবারই ওই কিশোরীর মা মেয়েকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযুক্ত বাড়ির মালিক হলদিয়া বন্দরের মেরিন বিভাগে অস্থায়ী কুক পদে কর্মরত। স্থানীয় বাসিন্দা মোহন দাস, আরতি দাসদের অভিযোগ, ‘‘গায়ে আগুন লেগে গেলে বা আত্মহত্যা করলে যে কেউ যন্ত্রণায় চিৎকার করবে। কিন্তু ঘটনার দিন কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি।’’ তাঁদের আরও অভিযোগ, ‘‘ঘটনার দিন অভিযুক্তের বাড়িতে মদের আসর বসেছিল। চারজনকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতেও দেখি। কিন্তু এ রকম ঘটনা ঘটে গিয়েছে, ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারিনি।’’
স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, অভিযুক্তের সঙ্গে প্রতিবেশীদের তেমন সদ্ভাব ছিল না। বেশিরভাগ সময় সে নেশা করেই থাকত। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।