গরমের জন্য মেদিনীপুর আদালতে আইনজীবীদের কর্মবিরতি চলছে। অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবীরা হাজির হননি। তাই বুধবার শ্রীনু নায়ডু হত্যা মামলার চার্জগঠনের শুনানি হল না। এই শুনানি হবে আগামী ১২ জুন। এ দিন মেদিনীপুরের বিশেষ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত এই দিন ধার্য করেছে। মামলার বিশেষ সরকারি আইনজীবী সমরকুমার নায়েক বলেন, “আগামী ১২ জুন মামলার পরবর্তী দিন ধার্য হয়েছে। ওই দিনই চার্জগঠনের শুনানি হবে।” তাঁর কথায়, “এ দিন অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবীরা হাজির হননি। তাই শুনানি হয়নি।”
বুধবার অবশ্য কড়া নিরাপত্তায় বাসব রামবাবু-সহ ধৃত ১৩ জনকে মেদিনীপুরের বিশেষ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে হাজির করানো হয়। অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে আদালত চত্বরে বাড়তি পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল। গত ২ মে মামলাটি দায়রা সোপর্দ হয়। পরের দিন অর্থাৎ ৩ মে এজলাস চূড়ান্ত হয়। এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া যে মেদিনীপুরের বিশেষ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে চলবে, সেই নির্দেশ ওই দিনই দেয় মেদিনীপুরের জেলা ও দায়রা আদালত। পরে মামলার পরবর্তী দিন ৭ জুন ধার্য করা হয়েছিল। সেই মতো এ দিন বিশেষ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে মামলাটি ওঠে। গত ১১ জানুয়ারি বিকেলে খড়্গপুরের নিউ সেটলমেন্ট এলাকায় তৃণমূলের ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কার্যালয়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হয় শ্রীনু। এই ওয়ার্ডেরই তৃণমূল কাউন্সিলর শ্রীনুর স্ত্রী পূজা। দুষ্কৃতী হামলায় নিহত হয় শ্রীনুর ‘ডান-হাত’ বলে পরিচিত ধর্মা রাও। জখম হয় তিন জন। শ্রীনু হত্যা মামলাটি চলছিল মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে।
ঘটনার ৮৭ দিনের মাথায় গত ৮ এপ্রিল মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে শ্রীনু হত্যা মামলার চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। চার্জশিটে ১৪ জনের নাম রয়েছে। এর মধ্যে বাসব রামবাবু-সহ ১৩ জন ধরা পড়ে গিয়েছে। কে কাশী রাও এখনও পলাতক। চার্জশিটে পুলিশ জানিয়ে দিয়েছে, রামবাবুই ঘটনার মূলচক্রী। পাশাপাশি এও জানানো হয়েছে, তদন্ত এখনও চলছে। প্রয়োজনে ‘সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট’ জমা দেওয়া হতে পারে। এই মামলায় সাক্ষী রয়েছেন ৮৯ জন। এরমধ্যে বেশ কয়েকজন আদালতে গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি অন্ধ্রপ্রদেশের তানুকা থেকে রামবাবুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগে- পরে আরও ১২ জন গ্রেফতার হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে খুন, অস্ত্র- আইন, বিস্ফোরক- আইন সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারা রয়েছে। এই মামলায় ধৃত বরুণ ঘোষ এবং নন্দ দাস জামিনের আবেদন জানিয়েছিল। আগে এ নিয়ে জেলা ও দায়রা আদালতে শুনানি হয়। শুনানি শেষে জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত।