হাতি ঠেকাতে ‘মাস্টার প্ল্যান’

বৃহস্পতিবারই গড়বেতার পানিকোটরের জঙ্গলে ঘাঁটি গেড়েছে ৪০-৪২টি হাতি। আশেপাশের জঙ্গলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আরও কয়েকটি দাঁতাল।

Advertisement

রূপশঙ্কর ভট্টাচার্য

গড়বেতা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:০১
Share:

বৃহস্পতিবারই গড়বেতার পানিকোটরের জঙ্গলে ঘাঁটি গেড়েছে ৪০-৪২টি হাতি। —ফাইল চিত্র।

হাতি নিয়ে ‘মাস্টার প্ল্যান’ করছে বন দফতর। বৃহস্পতিবার গড়বেতায় বন দফতরের একটি অনুষ্ঠানে এসে রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, ‘‘হাতি নিয়ে আমরা খুব চিন্তিত। সেজন্য হাতি নিয়েই একটা মাস্টার প্ল্যান তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে।’’ একই সঙ্গে হাতির হানার জন্য় ওড়িশার দিকেও আঙুল তুলেছেন তিনি। এ দিন মেদিনীপুরে বন দফতরেরই আরেকটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে তিনি দাবি করেন, ‘‘ওড়িশায় হাতির যে করিডর ছিল সেই করিডরটা ওরা সামনাসামনি বন্ধ করেনি। কিন্তু কায়দা করে বন্ধ করে দিয়েছে। ওরা সেচের ক্যানেল করেছে। ওরা বলছে, আমরা হাতিকে আটকাইনি। কিন্তু সেচের ক্যানাল থাকায় হাতি যেতে পারছে না। বাধা পাচ্ছে। এই সমস্যা মোকাবিলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছি।’’

Advertisement

বৃহস্পতিবারই গড়বেতার পানিকোটরের জঙ্গলে ঘাঁটি গেড়েছে ৪০-৪২টি হাতি। আশেপাশের জঙ্গলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আরও কয়েকটি দাঁতাল। এই হাতিদের নিয়েই জেরবার বন দফতর। এ বার নতুন নয়, প্রায় প্রতি বছরই চাষের ভরা মরসুমে দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় দাপায় হাতির দল। ক্ষয়ক্ষতি হয় প্রচুর। প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। হাতি নিয়ে রাজ্য সরকার কী ভাবছে? গড়বেতায় এ দিন বনমন্ত্রী বলেন, ‘‘হাতির হামলায় প্রাণহানি হলে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ আড়াই লক্ষ থেকে বাড়িয়ে চার লক্ষ করা হয়েছে। অন্যান্য ক্ষেত্রেও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। অর্থ দফতরের ছাড়পত্র পেলেই মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণের কাজ শুরু হবে।’’

মাস্টার প্ল্যানের রূপরেখা কী হবে? বনমন্ত্রী জানান, বেশ কয়েকটি জেলায় হাতির সমস্যা রয়েছে। উত্তরবঙ্গের জঙ্গল ও দক্ষিণবঙ্গের জঙ্গলের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। দক্ষিণের জঙ্গল একটানা নয়। মাঝেমধ্যে বসতি, রাস্তা, চাষের খেত রয়েছে। তাই দক্ষিণবঙ্গে হাতিদের জঙ্গলে আটকাতে গেলে সব দিক ভেবে পদক্ষেপ করতে হবে। সব দিক ভেবেই মাস্টার প্ল্যান করা হবে। তিনি বলেন, ‘‘হাতি খুবই বুদ্ধিমান প্রাণী। মানুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে তারা। আমরা বাস্তব দিকটা দেখে নিয়েই কাজ শুরু করব। ফসল, প্রাণহানি-সহ অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতি যাতে কম হয় সেটার উপরে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বন্যপ্রাণীদের তো জঙ্গলে ব্যারিকেড করে আটকে রাখা যায় না। সেই জন্যই হাতি নিয়ে বিশেষ প্ল্যান হচ্ছে।’’ একইসঙ্গে বনমন্ত্রী জানিয়েছেন, ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে বেশিরভাগ হাতি আসছে। প্রয়োজনে সেইসব রাজ্যের সঙ্গেও কথা বলা হবে।

Advertisement

এ দিন বনমন্ত্রী রূপনারায়ণ বন বিভাগের আমলাগোড়া বনাঞ্চলের পাথরিশোল বিট অফিসে বন দফতরের নবনির্মিত গেস্ট হাউস ‘বনপলাশী’র দ্বারোদঘাটন করেন। ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে তিনটি ঘর বিশিষ্ট এই গেস্ট হাউসটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ২১ লক্ষ টাকা। বনমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন মেদিনীপুর বন বিভাগের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা, গড়বেতার বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন