Coronavirus

সুস্থতার হার নব্বই ছুঁইছুঁই

এই উদ্বেগের মাঝেও আশার আলো সুস্থতার হার। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়েই করোনা রোগীদের সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২০ ০৩:০৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

প্রায় রোজই নতুন করোনা আক্রান্তের হদিস মিলছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। সংক্রমিত হচ্ছেন করোনা-যোদ্ধারাও। শনিবারই যেমন শালবনির করোনা হাসপাতালের এক চিকিৎসক, তিন নার্সের করোনা ধরা পড়েছে।

Advertisement

তবে এই উদ্বেগের মাঝেও আশার আলো সুস্থতার হার। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়েই করোনা রোগীদের সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। জেলায় এখন সুস্থতার হার প্রায় ৮৯ শতাংশ, যা অন্য অনেক জেলার থেকে অনেক বেশি। মৃত্যুর হারও ৩ শতাংশের কম।

করোনা মোকাবিলায় গঠিত জেলাস্তরের টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান তথা জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘নতুন করে কয়েকজন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন ঠিকই, তবে জেলায় করোনা আক্রান্তের সুস্থতার হারও বেশি। হারটা আশাপ্রদই।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডল জানাচ্ছেন, জেলায় করোনা থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডুরও মত, ‘‘জেলায় করোনা থেকে দ্রুত সেরে ওঠার হার বেশ আশাব্যঞ্জকই। উদ্বেগের মাঝেও এটা স্বস্তিরই।’’

Advertisement

জেলায় করোনা আক্রান্তদের একটা বড় অংশই পরিযায়ী শ্রমিক। সংক্রমিতদের অনেকেই আবার ছিলেন উপসর্গহীন। তবে জেলা স্বাস্থ্যভবনের এক সূত্র জানাচ্ছে, সার্বিকভাবে এখানে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার অনুপাতও বেশি নয়। শনিবার পর্যন্ত জেলায় ২৮,৪০১ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। পজ়িটিভ ৩৪৩ জন। অর্থাৎ, ১.২০ শতাংশ আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। জেলা স্বাস্থ্যভবনের ওই সূত্রের ব্যাখ্যা, জেলায় করোনা সংক্রমণ ছড়ালেও বহু আক্রান্তের শরীরে অজান্তে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে যাচ্ছে। ওই সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, সম্প্রতি আইসিএমআর-এর (ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ) এক সমীক্ষাতেও দেখা গিয়েছে, প্রাথমিক পর্যায়ে অন্তত কন্টেনমেন্ট জ়োন বা গণ্ডিবদ্ধ সংক্রমিত এলাকার মানুষদের একটা বড় অংশের শরীরে কোভিড-১৯ প্রতিরোধের ক্ষমতা তৈরি হয়েছে। ওই সূত্রের মতে, এর ফলেই সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যাকে সহজে ছাপিয়ে যেতে পেরেছে করোনা থেকে সেরে ওঠা মানুষের সংখ্যা।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনও জনগোষ্ঠীর ৬০ শতাংশের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে গেলে ভাইরাস নতুন করে ছড়াতে পারে না। জনগোষ্ঠীতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়তে শুরু করলে কন্টেনমেন্ট এলাকায় নতুন সংক্রমণের হার আরও কমবে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রের দাবি, এখানে এখনও পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত যে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে কয়েকজনের মৃত্যুর কারণ কো-মর্বিডিটি। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘জেলায় এমন কয়েকজন রোগীও ছিলেন, যাঁরা আক্রান্ত হওয়ার চার-পাঁচদিনের মাথায় সুস্থ হয়েছেন।’’ জানা যাচ্ছে, করোনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের মধ্যে আরও কয়েকজনের দিন কয়েকের মধ্যে ছুটি পাওয়ার কথা। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘জেলায় করোনায় আক্রান্ত হওয়ার শতাংশও এখন কম। রোজ যত নমুনার পরীক্ষা হচ্ছে, তার মধ্যে নামমাত্রেরই রিপোর্ট পজ়িটিভ আসছে। দ্রুত এই সংখ্যা আরও কমবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন