এক রাতে চুরি একই আবাসনের ৩টি ফ্ল্যাটে

মেদিনীপুর তাঁতিগেড়িয়ার এই বেসরকারি আবাসনটিতে ছ’টি টাওয়ারে ১১০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। যে টাওয়ারে চুরি হয়েছে, সেখানে পাঁচতলা জুড়ে ৩২টি ফ্ল্যাট আছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৩৫
Share:

একটি ফ্ল্যাটের তছনছ ঘর। নিজস্ব চিত্র

একই রাতে একই আবাসনের তিনটি ফ্ল্যাটে চুরির ঘটনা ঘটল। প্রথমে কোলাপসিবল গেট, তারপর কাঠের দরজার লক ভেঙে টাকা-গয়না নিয়ে পালাল দুষ্কৃতীরা। শনিবার রাতের এই ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে জেলার সদর শহরের নিরাপত্তা। দিন-রাত নিরাপত্তারক্ষী থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে এমন কাণ্ড ঘটল, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।

Advertisement

মেদিনীপুর তাঁতিগেড়িয়ার এই বেসরকারি আবাসনটিতে ছ’টি টাওয়ারে ১১০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। যে টাওয়ারে চুরি হয়েছে, সেখানে পাঁচতলা জুড়ে ৩২টি ফ্ল্যাট আছে। তার মধ্যে তিনতলার দু’টি ও চারতলার একটি ফ্ল্যাটে চুরির ঘটনা ঘটে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই বাসিন্দারা ফ্ল্যাটে ছিলেন না। প্রতিবেশীরাও কিছু টের পাননি।

নিরাপত্তারক্ষী থাকলেও সিসি ক্যামেরা নেই আবাসনে। আবাসিকদের সঙ্গে কেউ দেখা করতে এলে তাঁর নাম-ঠিকানা লেখার নিয়ম থাকলেও রাতে সব সময় তা মানা হয় না বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ মনে করছে, দুষ্কৃতীরা এই সব জেনেই ছক কষেছিল। এ দিন ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, ‘‘তদন্ত সুরু হয়েছে। কী কী চুরি গিয়েছে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ কুকুরও গিয়েছিল।’’

Advertisement

যে ৩টি ফ্ল্যাটে চুরির ঘটনা ঘটেছে, তার একটি অশ্বিনীকুমার মান্নার। পেশায় ব্যাঙ্কের অফিসার অশ্বিনীবাবু স্ত্রী রত্না মান্নাকে নিয়ে এখানে থাকেন। গত শুক্রবার তাঁরা এক পরিচিতের বাড়িতে গিয়েছিলেন। রবিবার সকালে ফিরে দেখেন, ফ্ল্যাটে দরজা ভাঙা। আলমারির পাল্লা খোলা। আর জিনিসপত্র তছনছ হয়ে খাটে-মেঝেতে ছড়িয়ে রয়েছে। অশ্বিনীবাবু বলেন, “আবাসনে নিরাপত্তারক্ষী থাকে। তাও যে ভাবে চুরি হয়েছে সেটাই চিন্তার। সোনা-রুপোর গয়না, নগদ টাকা সব খোওয়া গিয়েছে।’’ অশ্বিনীবাবুদের মতোই তিনতলায় ফ্ল্যাট তুষার পাত্রের। চুরি হয়েছে সেখানেও। তুষারবাবু বলেন, “দরজা ভেঙে যে ভাবে সব নিয়ে পালিয়েছে, তা উদ্বেগেরই।’’

চারতলার যে ফ্ল্যাটে চুরি হয়েছে, সেখানে ভাড়ায় কয়েকজন থাকতেন। প্রতিবেশীরা জানান, তাঁদের বেশিরভাগই পেশায় মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটেটিভ। তবে কেউই এ দিন ছিলেন না। ফলে, ফ্ল্যাট থেকে কী চুরি গিয়েছে, স্পষ্ট নয়। তমালকুমার চৌধুরী নামে প্রতিবেশী বলেন, “কিছু বুঝতে পারিনি। শব্দও শুনিনি।’’ মণিময় চট্টোপাধ্যায় নামে অন্য এক আবাসিক জানান, আগেও ছোটখাট চুরি হয়েছে। তবে এত বড় চুরি এই প্রথম। আবাসিকদের একাংশের অভিযোগ, আবাসন চত্বরে জনতিরিশেক শ্রমিক থাকে। তাঁরা অন্যত্র কাজ করেন। প্রোমোটাররাই এই শ্রমিকদের এখানে থাকার ব্যবস্থা করেছেন। সেই সূত্রে বহিরাগতদের আনাগোনাও রয়েছে। ফলে, আবাসনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।

তাও কেন সিসি ক্যামেরা নেই? সদুত্তর এড়িয়ে আবাসনের প্রোমোটার অঙ্কুর লোধা বলেন, “এ বার সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন