জাতীয় সড়ক জুড়ে বালির স্তূপ, পদে পদে মরণফাঁদ

বাড়িতে নির্মাণ কাজ চলছে, লরি বোঝাই হয়ে আসছে ইট, বালি। সে সব রাখা হবে কোথায়? কেন? সামনের রাস্তায়। সে রাস্তা পাড়ার ভিতরের রাস্তা হোক বা রাজ্য সড়ক কিংবা জাতীয় সড়ক। ইমারতি সামগ্রী রাখার ঠেলায় গাড়ি চলাচল নিয়েই সমস্যায় প্রশাসন। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার আশঙ্কা সঙ্গে নিয়েই পথ চলা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৫ ০১:০১
Share:

এ ভাবেই পড়ে থাকে বালি, স্টোন চিপস্‌। আরিফ ইকবালের তোলা ছবি।

বাড়িতে নির্মাণ কাজ চলছে, লরি বোঝাই হয়ে আসছে ইট, বালি। সে সব রাখা হবে কোথায়?

Advertisement

কেন? সামনের রাস্তায়। সে রাস্তা পাড়ার ভিতরের রাস্তা হোক বা রাজ্য সড়ক কিংবা জাতীয় সড়ক। ইমারতি সামগ্রী রাখার ঠেলায় গাড়ি চলাচল নিয়েই সমস্যায় প্রশাসন। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার আশঙ্কা সঙ্গে নিয়েই পথ চলা।

হলদিয়ার সিটি সেন্টার থেকে মিলন, ব্রজলালচক, বাড়সুন্দরা, কাষ্ঠখালি, কাপাসেড়িয়া হয়ে নন্দকুমারের দিকে ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে এগোলেই দেখা যাবে রাস্তার দু’পাশে সার দিয়ে রাখা বালি, স্টোনচিপস্। একই অবস্থা নন্দকুমার থেকে মহিষাদল, চৈতন্যপুর, সুতাহাটা, দুর্গাচকগামী বা মহিষাদল গেওখালি কিংবা কাপাসেড়িয়া মহিষাদল, কাপাসেড়িয়া তেরপেখ্যার বিভিন্ন রাস্তার।

Advertisement

মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তিলক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই তো সে দিন নামালক্ষাতে এই স্টোনচিপসের জন্যই দুর্ঘটনা ঘটল। লরিকে পাশ কাটাতে গিয়ে মোটরবাইক উল্টে মারা গেলেন এক ব্যক্তি।’’ তাঁর দাবি বারবার মাইকিং করেও কোনও লাভ হয়নি। বাসিন্দারা তাদের ইমারতি দ্রব্য সব সময়ই রাস্তায় রাখতে অভ্যস্ত।

অনেকেই অভিযোগ করেন এই বদ-অভ্যাস যে শুধু সাধারণ মানুষের তাই নয়। অনেক সময়ই সরকারি নির্মাণ কাজের জন্যও রাস্তার উপর মজুদ করা হয় ইমারতি দ্রব্য। সে কথা বোঝা যায় জাতীয় সড়কের পাশ দিয়ে গেল। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অনেক সময়ই দেখা যায় সড়ক থেকে বেশ খানিকটা দূরে কোনও গৃহস্থ বাড়িতে চলছে। কিন্তু অপরিসর রাস্তায় বড় লরি ঢুকতে পারে না। তাই বড় রাস্তাতেই সামগ্রী নামিয়ে রাখা হয়। প্রয়োজন মতো ছোট ঠেলা গাড়ি করে নিয়ে যাওয়া হয়। আবার ব্যবসায়ীরাও তাদের ইচ্ছে মতো ব্যবহার করেন রাস্তা।

অভিযোগ ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক কিংবা তমলুক থেকে নন্দকুমার, মহিষাদল হয়ে দুর্গাচকগামী ব্যস্ততম রাজ্যসড়কের ওপর ইমারত সামগ্রী রাখলেও প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।

হলদিয়ার বাসিন্দা অরুণাভ দাস জানান, ‘‘ব্যস্ততম রাস্তা গুলির উপর ইমারতি সামগ্রী ফেলে রাখায় যেন মরণফাঁদের সৃষ্টি হয়েছে। গাড়ি চালানোই বিভীষিকা। যে কোনও মুহূর্তে পিছলে যেতে পারে চাকা।’’ মহিষাদলের বাসিন্দা মানস আদক জানান দাবি করেন, প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপ করা উচিত।

জেলার বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার উপরে যে ইমারতি দ্রব্য রাখা হয় সে কথা স্বীকার করেছেন পূর্ত দফতর (সড়ক) এর তমলুক হাইওয়ে ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার চন্দন পাণিগ্রাহী। চন্দনবাবু জানান জেলার যাঁরা এ ভাবে রাস্তার অপব্যবহার করছেন তাঁদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেই শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

হলদিয়ার মহকুমা শাসক শঙ্কর নস্কর জানান ‘‘জাতীয় সড়ক বা রাজ্যসড়কের ওপর ইট বালি পাথর রাখার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। বিডিওদের মাধ্য

নোটিশ পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থার বিরুদ্ধে।’’

তাছাড়াও সরকারি কাজের জন্য প্রয়োজনীয় ইমারতি দ্রব্যও যাতে রাস্তার ওপর না রাখা হয় সে দিকে নজর দিতে বলা হয়েছে বিডিওদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement