সৌরশক্তির আলোয় গ্রামের ভোলবদল

গ্রামের পঞ্চাশটি পরিবার এই প্রকল্প থেকে উপকৃত হবেন। প্রতিদিন সৌরশক্তির সাহায্যে দশ লিটার পানীয় জল ও সৌরআলো পাবেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৯ ০০:৫৮
Share:

উৎসাহী গ্রামবাসীরা। —নিজস্ব চিত্র।

সৌরশক্তি চালিত গোটা একটা গ্রাম! সেখানে প্রয়োজনীয় সব কিছুই চলে সৌরশক্তিতে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এমন সৌরগ্রাম (সোলার ভিলেজ) গড়ে তুলল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। দাঁতন ১ ব্লকের শালিকোঠা পঞ্চায়েতের পিছিয়ে পড়া আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম দোবিষ্যাকেই বেছে নেয় সংস্থাটি। মঙ্গলবার সেই সৌরগ্রামের উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলা শাসক রোহন জোশি, সংস্থার আধিকারিক ও স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকেরা।

Advertisement

গ্রামের পঞ্চাশটি পরিবার এই প্রকল্প থেকে উপকৃত হবেন। প্রতিদিন সৌরশক্তির সাহায্যে দশ লিটার পানীয় জল ও সৌরআলো পাবেন। পানীয় জলের অপচয় রোধে এটিএম কার্ড দেওয়া হয়েছে প্রত্যেক পরিবারের হাতে। কার্ডটি যন্ত্রের সামনে ধরলে মিলবে পানীয় জল। পরিবার পিছু প্রতিদিন ১০ লিটার পরিস্রুত পানীয় জল পাবে। গ্রামের বাসিন্দারা তিনটি করে বিদ্যুতের পয়েন্ট পেয়েছেন। সঙ্গে মোবাইল চার্জের পয়েন্ট। শুধু তাই নয়, গ্রামের রাস্তায় মোট সতেরোটি পথবাতি লাগানো হয়েছে। মাঠে সৌর পাম্প বসিয়ে সাত একর জমি চাষে সেচের ব্যবস্থা করেছে সংস্থাটি। গ্রামটিকে মডেল সোলার গ্রাম হিসেবে গড়ে তুলতে দোবিষ্যা শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের একটি কক্ষে সৌরবিদ্যুৎ চালিত দশটি কম্পিউটার দেওয়া হয়েছে ছাত্র ছাত্রীদের কম্পিউটার শিক্ষার জন্য।

এই প্রকল্পে খুশি গ্রামের মানুষ। এলাকাবাসী মাধুরী মাহালি, অজয় মাহালি, গোলাপী মাহালিরা বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ ও জলের সমস্যা ছিল। বিদ্যুৎ থাকলেও বেশি টাকা বিলের জন্য তা ব্যবহার করতে পারতাম না। এবার থেকে সব সময় বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ পানীয় জল পাব। ছেলেমেয়েরা কম্পিউটারও শিখতে পারবে। বেশ ভাল লাগছে।’’

Advertisement

জল, আলোর জন্য খরচ কত হবে? তিনটি পয়েন্টে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারে গ্রাহকদের মাসে পঞ্চাশ টাকা দিতে হবে। সংস্থার বক্তব্য, এলাকায় প্রকল্পটি দেখভাল করার জন্য একটি গ্রাম কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এই টাকা নেওয়া হবে। পরিবেশ সংরক্ষণ সমিতির পক্ষে বিনয় জাজু বলেন, ‘‘সার্বিক উন্নয়নের জন্য ডিজিটাল ইন্ডিয়ার প্রচার এবং জাতীয় সৌরবিদ্যুতের মতো ভারত সরকারের উদ্যোগের সঙ্গে মেলাতে এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।’’ এই প্রকল্পের আওতায় ৫ কে ডব্লিউ সোলার মাইক্রো গ্রিড সিস্টেম, ৫ কে ডব্লিউ সোলার আইসিটি সেন্টার, ২ কে ডব্লিউ সৌর পরিশোধিত পানীয় জলের ব্যবস্থা, ৫ কেডব্লিউ সোলার সেচ পাম্প এবং সোলার পথবাতি স্থাপন করা হয়েছে। সংস্থার পক্ষে সুরজিত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পঞ্চাশটি পরিবারকে এই সৌর প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। সতেরোটি পথবাতি থেকে রাতে আলোকিত থাকবে এলাকা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement