পড়াশোনার খরচ চালাতে সাহায্য আইআইটি-র

এই সকল দুঃস্থ মেধাবী ছাত্ররা যাতে পড়াশোনা শেষে রোজগার করে পড়ার খরচ পরিশোধের সুযোগ পান, সে জন্য ২০১৬ সালে ‘লার্ন-আর্ন-রিটার্ন’ প্রকল্পের কথা জানিয়েছিলেন খড়্গপুর আইআইটি-র অধিকর্তা পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী। শনিবার ওই প্রকল্পে বৃত্তি দেওয়া হল তিন পড়ুয়াকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৩৯
Share:

অর্থের অভাবে মাঝপথে থমকে যায় অনেকেরই পড়াশোনা। আইআইটিতে সুযোগ পেয়েও শুধু অভাবের জন্য পিছিয়ে যান অনেকে। এই সকল দুঃস্থ মেধাবী ছাত্ররা যাতে পড়াশোনা শেষে রোজগার করে পড়ার খরচ পরিশোধের সুযোগ পান, সে জন্য ২০১৬ সালে ‘লার্ন-আর্ন-রিটার্ন’ প্রকল্পের কথা জানিয়েছিলেন খড়্গপুর আইআইটি-র অধিকর্তা পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী। শনিবার ওই প্রকল্পে বৃত্তি দেওয়া হল তিন পড়ুয়াকে।

Advertisement

আইআইটিতে প্রাক্তনী পুনর্মিলন উৎসবে এ দিন প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের পড়ুয়া জ্যোতিষ্মান দাস, রথীন সিংহ ও জ্যোতি অগ্রবালের হাতে বৃত্তি তুলে দেওয়া হয়। আইআইটি সূত্রে খবর, অভাবের কারণে পড়াশুনোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত পড়ুয়াদের কথা মাথায় রেখেই এই প্রকল্প চালু হয়েছে। যাঁরা এই প্রকল্পে সাহায্যের জন্য আবেদন করবেন, তাঁদের প্রথম সেমেস্টারের পরীক্ষার ফল ও পারিবারিক আয় যাচাই করেই বৃত্তি প্রদানের জন্য বাছাই করা হবে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়ার প্রথম সেমেস্টারে মেধা পয়েন্ট ৯-এর উপর থাকতে হবে।

আইআইটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পে নথিভুক্ত পড়ুয়াদের পড়াশোনা চলাকালীন কোনও টাকা খরচ করতে হবে না। সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াদের পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য আইআইটি-র প্রাক্তনীদের সাহায্য দিয়ে একটি তহবিল গড়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ১২০ জন প্রাক্তনী সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এই প্রকল্পে নথিভুক্ত পড়ুয়ারা মাসে ১০ হাজার টাকা করে পাবেন। তবে বৃত্তিপ্রাপ্ত পড়ুয়ারা পড়াশোনা শেষে নিজের রোজগার থেকে সেই টাকা নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দান করবে বলে আশা আইআইটি-র।

Advertisement

আইআইটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন আইআইটিতে প্রতিবছর পড়ার খরচ প্রায় ৮ লক্ষ টাকা। তবে প্রতিবন্ধী ছাত্রদের পড়াশোনার খরচে ছাড় রয়েছে। তাছাড়া পড়ুয়াদের পারিবারিক আয় ১ থেকে ৩ লক্ষ টাকার মধ্যে হলে ফি মকুবের ব্যবস্থাও রয়েছে। পড়ুয়াদের পারিবারিক রোজগার ৩ থেকে ৫ লক্ষ টাকার মধ্যে হলে পড়াশোনার খরচে দুই তৃতীয়াংশ ছাড় পাওয়া যায়। ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা সীমার মধ্যে যাঁদের পারিবারিক আয়, সেই সব পড়ুয়ার মেধা ৬ পয়েন্টের উপরে হলেও ‘মেরিট-কাম-মিনস্‌’ বৃত্তিতে পড়াশোনার খরচে ছাড় পাওয়ার সুবিধা রয়েছে। তবে অভাবের কারণে অনেক পড়ুয়া এই ছাড়ের সুবিধা পান না। সেই সমস্ত ছাত্রদের কথা ভেবেই এই ‘লার্ন-আর্ন-রিটার্ন’ প্রকল্প চালু করছে আইআইটি।

আইআইটি-র অধিকর্তা পার্থপ্রতিমবাবু বলেন, “পড়ুয়াদের আর্থিকভাবে সাহায্য করতে এই লার্ন-আর্ন-রিটার্ন প্রকল্পে বৃত্তির চিন্তা করা হয়েছে। পড়ুয়াদের মধ্যে নিজের প্রতিষ্ঠানকে ভবিষ্যতে এই সাহায্য ফিরিয়ে দেওয়ার মানসিকতাও তৈরি করা হচ্ছে।” বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্র জ্যোতিষ্মান দাস বলেন, “এই বৃত্তি পড়াশোনার বহুমুখী খরচ চালাতে সাহায্য করবে। অঙ্গীকার করছি, ভবিষ্যতে এই বৃত্তি প্রতিষ্ঠানকে ফিরিয়ে দেব।” বৃত্তিপ্রাপ্ত জ্যোতি অগ্রবালও বলছেন, “প্রাক্তনীদের সামনে এই বৃত্তি পেয়ে আমি গর্বিত। একজন মেয়ে হিসেবে মনে করি, এই বৃত্তি দেখে আগামীদিনে অভিভাবকেরা আরও বেশি করে মেয়েদের ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াতে পাঠাবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন