সমুদ্র-ঝড়ে বিকল দুই ভুটভুটি, রক্ষা ১২ মৎস্যজীবীর

ঝড়ে ইঞ্জিন বিকল হয়ে মাঝসমুদ্রে বিকল হয়ে পড়েছিল দুটি ভুটভুটি। শেষ পর্যন্ত উদ্ধার করা গিয়েছে ওই দুই ভুটভুটির ১২ জন মৎস্যজীবীকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দিঘা শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:৫১
Share:

ঘরে ফেরার অপেক্ষায় উদ্ধার হওয়া মৎস্যজীবীরা। নিজস্ব চিত্র

ঝড়ে ইঞ্জিন বিকল হয়ে মাঝসমুদ্রে বিকল হয়ে পড়েছিল দুটি ভুটভুটি। শেষ পর্যন্ত উদ্ধার করা গিয়েছে ওই দুই ভুটভুটির ১২ জন মৎস্যজীবীকে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাতে তাঁদের উদ্ধার করে দিঘা মোহনায় নিয়ে আসা হয়। উদ্ধার হওয়া ওই মৎস্যজীবীদের সকলেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের বাসিন্দা বলে দিঘা ফিশারম্যান অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে।

অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, ‘‘এই ১২ জন মৎস্যজীবীর যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সেদিকে আমরা খেয়াল রেখেছি। পুলিশকে আমরা অনুরোধ করেছি ওঁরা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন তার ব্যবস্থা করতে।’’

Advertisement

উদ্ধার হওয়া ওই মৎস্যজীবীরা জানিয়েছেন গত ৪ সেপ্টেম্বর ‘মা গঙ্গা’ এবং ‘অপু-১’ নামের দুটি ভুটভুটিতে চেপে তারা সমুদ্রে মাছ ধরতে যান। দুটি ভুটভুটিতে ৬ জন করে মোট ১২ জন ছিলেন। অপু-১ ট্রলারটি গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে চলে যায়। তার পিছনে ছিল মা গঙ্গা। সামুদ্রিক ঝড়ের দাপটে সমুদ্রের মাঝখানে অপু-১ ভুটভুটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। প্রবল ঢেউয়ের ধাক্কায় অপু-১ ডুবে যাওয়ার উপক্রম হলে তাতে থাকা মৎস্যজীবীদের প্রাণ বাঁচাতে এগিয়ে আসে মা গঙ্গা। বৃহস্পতিবার অপু-১ ভুটভুটির মালিক কাকদ্বীপ-৮ নম্বর পশ্চিম গঙ্গাধরপুরের বাসিন্দা স্বপন বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমিও ভুটভুটিতে ছিলাম। কোনও রকমে আমরা ৬ জন মা গঙ্গায় উঠে পড়ি। অপু-১ খারাপ অবস্থায় মাঝসমুদ্রেই থেকে গিয়েছে।’’

এরপর মা গঙ্গায় মোট ১২ জন মৎস্যজীবী সমুদ্রের পাড়ের দিকে ফিরতে থাকেন। কিন্তু দিঘা মোহনা থেকে প্রায় পাঁচ নটিক্যাল মাইল দূরে মা গঙ্গার ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়ায় সকলেই বিপদে পড়েন। মা গঙ্গার মালিক দক্ষিণ ২৪ পরগনার তালতলার স্টিমারঘাটের বাসিন্দা সুশান্ত সরকার ওই ভুটভুটিতে ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘তখন প্রবল ঝড় চলছিল। ওই অবস্থায় ভাগ্যের উপর হাল ছেড়ে দিই আমরা। ঢেউয়ের ধাক্কায় সমুদ্রে ভাসতে শুরু করে ভুটভুটি। এভাবেই ভাসতে ভাসতে দিঘা মোহনার কাছাকাছি পৌঁছে যাই।’’

দিঘা উপকূল পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবারই ‘আজমাতুল বাহার’ নামে একটি ট্রলার মাঝসমুদ্রে বিকল হয়ে পড়েছিল। তাকে উদ্ধারের জন্যই যাচ্ছিল দিঘা উপকূল পুলিশের রেসকিউ স্পিড বোট। তারাই সমুদ্রে নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে মা গঙ্গাকে ভাসতে দেখে। কাছে গিয়ে বিষয়টি জানার পর পুলিশ মা গঙ্গা থেকে ১২ জন মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করে দিঘা মোহনায় নিয়ে আসে। পরে দিঘা উপকূল পুলিশের পক্ষ থেকে ওই মৎস্যজীবীদের বাড়িতে এবং কাকদ্বীপ পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। মা গঙ্গাকে উদ্ধার করে দিঘা মোহনায় আনা হয়েছে। অপু-১ কে উদ্ধারের জন্য পুলিশের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তার মৎস্যজীবীরা।

দিঘা উপকূল পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, খারাপ আবহাওয়ার জন্য এখন সমুদ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে, ওই মৎস্যজীবীরা মা গঙ্গা ভুটভুটি নিয়ে কাকদ্বীপ যেতে পারবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন