প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় শাসক দলের নেতা-কর্মীদের দ্বারা বিরোধী দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে বার বার। শাসক দলের অনেক নেতার মুখেই শোনা গিয়েছে পঞ্চয়েতকে বিরোধীশূন্য করার বার্তা। যে বার্তার জেরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই বেশ কিছু পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতিতে জয় নিশ্চিত করে ফেলেছে তৃণমূল। কিন্তু বিরোধীরাও যে ছেড়ে কথা বলবে না কিছু ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই তার আঁচ পেয়েছে শাসক দল। তবে তা যে দলেরই কারও হাত ধরে আসবে তা বোধহয় ভাবতে পারেননি পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার ব্লকের তৃণমূল নেতারা।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার ব্লকের চকশিমুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি বুথে তাদের প্রার্থী কালীপদ মাজিকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। যিনি কালীপদবাবুর বিরুদ্ধেই এ বার নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। আহত কালীপদবাবুকে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
যা দেখে বাম-বিজেপি কর্মীদের অনেকেই কটাক্ষ করে বলছেন, ‘এ তো সেমসাইড গোল হচ্ছে’। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে নির্দল প্রার্থী দেবরঞ্জন অধিকারীর বিরুদ্ধে নন্দকুমার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন কালীপদবাবু। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
তৃণমূল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চকশিমুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চকশিমুলিয়া উত্তর ১৩ নম্বর আসনে এ বার তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন প্রেমানন্দ চরণ। তাঁর বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন দেবরঞ্জন অধিকারী। দলের একাংশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দেবরঞ্জন তৃণমূলের কর্মী। পঞ্চায়েতে দলীয় টিকিট না পেয়ে নির্দল হিসেবে লড়াই করছেন। ঘটনার দিন বিকেলে কালীপদবাবু বাড়ি ফেরার সময়ে দেবরঞ্জনের উদ্দেশে গালিগালাজ করনে বলে অভিযোগ। এই নিয়ে দু’পক্ষে বচসা বাধে। সেই সময় কালীপদবাবুকে দেবরঞ্জন ও তাঁর সঙ্গীরা মারধর করেন বলে অভিযোগ। ঘটনার কথা স্বীকার করে নন্দকুমারের ব্লক তৃণমূল সভাপতি ও বিধায়ক সুকুমার দে বলেন, ‘‘কালীপদবাবুকে মারধরের ঘটনা জানতে পেরেছি। নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেওয়া দেবরঞ্জনও দলের কর্মী। দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
এ সব দেখে শাসক দলেরই একাংশ নেতা-কর্মীকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যে ভাবে বেড়েছে, তাতে ভোটের আগে এরকম যে আর ঘটবে না তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না’।