‘দল-কাঁটা’ নিয়ে শঙ্কা শাসকদলে

তবে এ ভাবে বিরোধীদের বাধা দেওয়ার কাজে সফল হলেও বহু আসনে জয় আসবে কি না তা নিয়ে কপালে ভাঁজ পড়েছে শাসক দল তৃণমূলের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:০১
Share:

বিডিও, মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে তৃণমূলের জমায়েত ও আক্রমণের জেরে তাদের বহু প্রার্থী মনোনয়নই জমা দিতে পারেনি বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ তুলেছে বামফ্রন্ট, বিজেপি, কংগ্রেস-সহ বিরোধীদলগুলি। পরিণামে বিরোধীশূন্য ভাবে অনেক আসনে জয় নিশ্চিত তৃণমূল প্রার্থীদের। জেলায় পঞ্চায়েতগুলিকে বিরোধীশূন্য করার ডাক দিয়েছেন পরিবহণ মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধীদের অভিযোগ, সেই লক্ষ্য পূরণ করতে গিয়েই শাসক দলের নেতা-কর্মীদের এমন দাপাদাপি।

Advertisement

তবে এ ভাবে বিরোধীদের বাধা দেওয়ার কাজে সফল হলেও বহু আসনে জয় আসবে কি না তা নিয়ে কপালে ভাঁজ পড়েছে শাসক দল তৃণমূলের। কারণ এত রকম চেষ্টার পরেও দেখা গিয়েছে, তৃণমূলেরই একাংশ পদাধিকারী এবং কর্মী দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধেই মনোনয়ন জমা দিয়ে ভোটের লড়াইয়ে নেমে পড়েছেন। যা নিয়ে নিজেদের অস্বস্তি গোপন করেননি শাসক দলের অনেক নেতা-কর্মীই।

পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম, নন্দকুমার থেকে পাঁশকুড়া সহ বিভিন্ন ব্লকেই শাসক দলের বেশ কিছু নেতা-কর্মী টিকিট না পেয়ে কোথাও নির্দল আবার কোথাও বিজেপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে লড়াইয়ে নেমেছেন বলে অভিযোগ। পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলীয় কোন্দল বরদাস্ত করা হবে না বলে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন জনসভায় ঘোষণা করলেও তা দলেরই কিছু নেতা-কর্মী না মানাতেই এমন অবস্থা বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Advertisement

দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জমিরক্ষা আন্দোলনের আঁতুড়ঘর নন্দীগ্রাম তৃণমূলের শক্তঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। সেই নন্দীগ্রাম-১ ব্লকে এ বার বিজেপি, বামফ্রন্ট এবং এসইউসি প্রার্থীরা অধিকাংশ আসনে মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি বলে অভিযোগ। কিন্তু এমন অবস্থা সত্ত্বেও খোদ নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূল নেতা আবু তাহের এবার পঞ্চায়েত সমিতির যে আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন সেই আসনেই দলীয় প্রার্থী হিসেবেই মনোনয়ন জমা দিয়েছেন কেন্দেমারি অঞ্চল সভাপতি বনবিহারী পাল। ফলে পঞ্চায়েত সমিতির ওই আসনে মুখোমুখী লড়াই শাসক দলের দুই নেতার। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আবু তাহের ও দলের ব্লক সভাপতি মেঘনাদ পালের মধ্যে কোন্দলের জেরেই মেঘনাদবাবুর ঘনিষ্ঠ বনবিহারীবাবু এমন কাজ করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে দলেরই এক নেতা প্রার্থী হওয়া নিয়ে তাহের বলেন, ‘‘দলের নির্দেশে আমি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছি। অন্য কেউ আমার বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছে কি না জানা নেই।’’

তবে গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই য়ে এই ঘটনা তা মানতে চাননি ব্লক তৃণমূল সভাপতি মেঘনাদ পাল। তিনি বলেন, ‘‘দলকে না জানিয়ে বনবিহারীবাবু মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন।’’

আর জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারীর বক্তব্য, ‘‘দলের পদাধিকারীরা কেউ দলের বিরুদ্ধে মনোনয়ন জমা দেননি। দলের হয়েই জমা দিয়েছেন। তবে পরে তাঁরা এ সব প্রত্যাহার করে নেবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন