উপসমিতিতে কোন্দল সবংয়ে

সবং ব্লক জুড়েই গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ঘিরে তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য অমূল্য মাইতি ও সাংসদ মানস ভুঁইয়ার অনুগামীদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:২৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

কোন্দল যেন থামার কোনও চিহ্নই নেই। তা সে যতই দলীয় স্তরে পদক্ষেপ করা হোক না কেন। এ বার পঞ্চায়েতের উপ-সমিতি গঠনেও বিভাজন দেখা দিল তৃণমূলে। উপ-সমিতি গঠনে বাম সমর্থিত নির্দলদের গুরুত্ব দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠল শাসক দলের অন্দরে।

Advertisement

মঙ্গলবার ও বুধবার সবংয়ের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতে উপ-সমিতি গঠনের দিন ছিল। এখনও পর্যন্ত সবংয়ে ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন হয়েছে। এই দু’দিনে ৫টি করে গ্রাম পঞ্চায়েত তাই উপ-সমতি গঠন করা হয়। তবে সেই উপ-সমিতি গঠনে বামেদের সমর্থনে জয়ী নির্দলদের বিভিন্ন পদে বসানো হয়েছে বলে তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।

এই ঘটনার প্রতিবাদে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যদের একাংশ ওই উপ-সমিতি গঠনের অনুষ্ঠানেও গরহাজির ছিলেন। এক্ষেত্রে ফের প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। ঘটনায় ক্ষুব্ধ তৃণমূলের সবং ব্লক সভাপতি।

Advertisement

সবং ব্লক জুড়েই গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ঘিরে তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য অমূল্য মাইতি ও সাংসদ মানস ভুঁইয়ার অনুগামীদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। তবে নির্বাচনের পরে সেই কোন্দল আরও বেড়েছে। বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের দলের নির্দেশ অমান্য করে ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রধান বাছাই করে বোর্ড গঠন হয়েছে। এমনকী, সিপিএম-বিজেপি সমর্থিত নির্দলদের সমর্থন নিয়ে বোর্ড গঠন হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় অস্বস্তির মুখে পড়ে দলের ব্লকের কার্যকরী সভাপতি ও দেভোগ অঞ্চল সভাপতিকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে তৃণমূল।

অবশ্য এর পরেও কোন্দলে রাশ টানা যায়নি। বরং ছোটখাটো ঘটনা ঘটতেই থাকে। এ বার উপ-সমতির নির্বাচনেও দুই গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল। উপ সমিতি গঠনে বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতে গরহাজির থাকলেন মানস অনুগামীরা। এমনকী বাম সমর্থিত জয়ী পঞ্চায়েত সদস্যদের উপ-সমিতিতে রাখার অভিযোগে সরব হয়েছে তাঁরা।

উপ সমিতির গঠনে দেভোগে ১৮জন পঞ্চায়েত সদস্যের মধ্যে মানস অনুগামী বলে পরিচিত ৭জন পঞ্চায়েত সদস্য উপস্থিত থাকেনি। আবার নারায়ণবাড়ে উপ-সমিতি গঠনে মানস অনুগামী ৪জন পঞ্চায়েত সদস্য গরহাজির ছিলেন।

ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে সিপিআই সমর্থিত এক পঞ্চায়েত সদস্য উপ সমিতির সদস্য হওয়ায় ক্ষুব্ধ তৃণমূলের একাংশ। একইভাবে বলপাই গ্রাম পঞ্চায়েতেও ২জন বাম সমর্থিত নির্দল উপ সমিতির সদস্য হওয়ায় এ দিন উপস্থিত থাকেননি মানস অনুগামী ৪জন পঞ্চায়েত সদস্য।

ঘটনাটি নিয়ে মানস অনুগামী যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আবু কালাম বক্স বলেন, “সম্পূর্ণ অনৈতিক ভাবে বিরোধী দলের সমর্থনে জয়ীদের নিয়ে উপসমিতি গঠন করা হয়েছে। আমি উচ্চ নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েছি।” যদিও অমূল্য বলেন, “বলপাইয়ের দু’জন ও নারায়ণবাড়ের একজন আগেই আমাদের দলে যোগ দিয়েছিল। উপ-সমিতি গঠনে যাঁরা গরহাজির ছিল তাঁরা নিজেদের লোককে পদে বসাতে না পারায় আসেনি।”

আর বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি প্রভাত মাইতি বলেন, “বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতেই দলের নির্দেশ অমান্য করে উপসমিতি গঠন করা হয়েছে।’’

তা হলে এরপর কি কোনও পদক্ষেপ করা হবে? প্রভাতের কথায়, ‘‘আমি বিষয়টি উচ্চ নেতৃত্বকে জানাব। তারপর উচ্চ নেতৃত্ব যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন