এই কার্যালয় ঘিরেই বিতর্কের সূত্রপাত। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত নির্বাচনের অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিরঙ্কুশ জয় পেলেও বোর্ড গঠনে সামনে এসেছে গোষ্ঠী কোন্দলের ছবি। বিশ্বকর্মা পুজোর আগে শিল্প শহর হলদিয়ায় এবার দলীয় কার্যালয় দখল ঘিরে গন্ডোগোল শাসক শিবিরে। যুব-তৃণমূলের একটি কার্যালয় দখলের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলেরই কাউন্সিলরের স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি হলদিয়া পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের।
স্থানীয় সূত্রের খবর, হলদিয়ার ভবানীপুরের মিলন এলাকায় একটি দোতলা ভবনের ছাদে শাসক দলের কার্যালয় ছিল। অতীতে ওই কার্যালয় থেকে শহরের যুব তৃণমূলের সাংগঠনিক কাজকর্ম পরিচালিত হত বলে দাবি নেতৃত্বের। কিন্তু শাসক দলের যুব সংগঠনের ওই কার্যালয় দখল হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। রাতারাতি ভবনের দেওয়ালে লেখা হয়েছে ‘কাউন্সিলরের কার্যালয়’। ওই ঘটনা সম্প্রতি সামনে আসতেই শাসকদলের দুই পক্ষের মধ্যে টানাপড়েন শুরু হয়ে গিয়েছে।
হলদিয়া শহর যুব তৃণমূল কার্যকারী সভাপতি অর্ণব দেবনাথ বলেন, ‘‘উত্তম প্রধান নামে স্থানীয় এক তৃণমূল কর্মী ও তার সঙ্গীরা দলীয় অফিসে তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকে। পরে দলীয় কার্যালয়ে থাকা নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি লাগানো ফ্লেক্স ও দলীয় পতাকা ছিঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়।’’ অভিযুক্ত উত্তম সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর পম্পা প্রধানের স্বামী।
যুব নেতৃত্ব জানিয়েছেন, ওই কার্যালয় ২০০৯ সাল থেকে সাংগঠনিক কাজে ব্যবহার করা হত। এমনকী, অর্ণবের নামে ‘হোল্ডিং ট্যাক্স’ও জমা পড়ত পুরসভার তহবিলে। স্থানীয় সূত্রের খবর, গত কয়েক মাস ধরে ওই কার্যালয়টি বন্ধ ছিল। তবে যুব নেতারা জানিয়েছেন, শিল্প শহরে বিশ্বকর্মা পুজো বড় করে হয়। তাই কর্যালয়টি দর্শনার্থীদের জন্য সহায়তা কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সে জন্য ঘর পরিষ্কার করে চুনও দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রের খবর, গত পুর নির্বাচনের পর থেকে যুব নেতা অর্ণব এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোষ্ঠীর বিবাদ শুরু হয়। সম্প্রতি, কার্যালয়টি ‘দখল’ নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল দু’পক্ষই।
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অবশ্য মানতে রাজি নয় অভিযুক্ত উত্তম প্রধান। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘উনি দলের কেউ নয়। তাই দলীয় সম্পত্তিতে কাউন্সিলরের কার্যালয় গড়ে তোলা হয়েছে। এতে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সকলে এখানে আসতে পারবেন। আর সে জন্যই ওই উদ্যোগ।’’
এদিকে, অফিস দখল হওয়ার অভিযোগ জেলা নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে বলে যুব তৃণমূলের তরফে দাবি। এ প্রসঙ্গে যুব তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি বলেন, ‘‘এ ধরনের অভিযোগ জানার পর রাজ্য নেতৃত্বকে অবগত করেছি। দলের কার্যালয় কেন এমন দখল হবে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’