আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল, আশায় বাম-বিজেপিও

সরকারি কর্মীরা ব্যস্ত ভোটের হিসাব কষে দেখতে। যাঁরা ভোট গণনার কাজে ব্যস্ত তাঁদের অবশ্য নিঃশ্বাস ফেলার সময় নেই। সোমবার এমনই দৃশ্য চোখে পড়ল এগরায়। পুরসভা ভবনের পূর্ত বিভাগে দেখা গেল কর্মীরা আলোচনায় ব্যস্ত। হাতে রীতিমতো কাগজ কলম। ওয়ার্ডে ভোটারের সংখ্যার ভিত্তিতে প্রাপ্ত ভোটে প্রিয় নেতার জয়ের হিসাব কষে দেখতেই বেলা বয়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

এগরা ও কাঁথি শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৩১
Share:

শেষ মুহূর্তের কাজ কাঁথির একটি ভোট গণনা কেন্দ্রে। ছবি: সোহম গুহ।

সরকারি কর্মীরা ব্যস্ত ভোটের হিসাব কষে দেখতে। যাঁরা ভোট গণনার কাজে ব্যস্ত তাঁদের অবশ্য নিঃশ্বাস ফেলার সময় নেই। সোমবার এমনই দৃশ্য চোখে পড়ল এগরায়। পুরসভা ভবনের পূর্ত বিভাগে দেখা গেল কর্মীরা আলোচনায় ব্যস্ত। হাতে রীতিমতো কাগজ কলম। ওয়ার্ডে ভোটারের সংখ্যার ভিত্তিতে প্রাপ্ত ভোটে প্রিয় নেতার জয়ের হিসাব কষে দেখতেই বেলা বয়ে যায়।

Advertisement

তবে ব্যস্ততা চূড়ান্ত মহকুমাশাসকের দফতরে। সেখানে‌ই স্ট্রং রুম-এ রাখা ইভিএম গুলি। পাশেই গণনাকেন্দ্র। মহকুমাশাসক ও রিটার্নিং অফিসার অসীম কুমার বিশ্বাসের আশ্বাস ‘‘এগরায় গণনা প্রস্তুতি সম্পূর্ণ। কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সব ভাল ভাবেই মিটে যাবে।’’

ঠিক কেমন নিরাপত্তার ব্যবস্থা হয়েছে? বিবরণ দিতে গিয়ে অতিরিক্ত পুর-নির্বাচনী রিটার্নিং অফিসার চিত্রদীপ সেন বলেন, ‘‘ত্রিস্তর নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা রয়েছে। মোট ২১৫ জন রাজ্য পুলিশ, ইএফআর ও স্ট্যাকো জওয়ান রয়েছেন এই ত্রিস্তর বেষ্টনীতে।’’ এ ছাড়া গণনাকেন্দ্রে রয়েছে দু’টি সিসিটিভি ক্যামেরা ও ভিডিওগ্রাফি ক্যামেরা। প্রশাসন সুত্রে জানা গিয়েছে মহকুমা প্রশাসনিক ভবনের বাইরে এগরা-পটাশপুর রাস্তাটির দু’দিকে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের জন্য ‘ড্রপ গেট’-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

Advertisement

সকাল ৮ টা থেকে এগরা পুরসভার ১৪টি ওয়ার্ডের ২৭টি বুথের জন্য ইভিএম গুলির ভোট গণনা হবে ৬টি টেবিলে মোট পাঁচ রাউন্ডে। পর্যাপ্ত এ দিকে রাজনৈতিক দলগুলি ব্যস্ত আগাম গণনায়। নতুন বোর্ড গঠনে আশাবাদী বাম ও তৃণমূল। অন্যদিকে নতুন বোর্ডের নির্ণায়ক হবে বলে আশা কংগ্রেস, বিজেপি ও নির্দলের। বামেদের পক্ষে এগরা পুরসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা ও জেলা সিটুর সম্পাদক সুব্রত পণ্ডা বলেন, ‘‘আশা করি বিগত পুরবোর্ডের অন্যায়ের প্রতিবাদে এগরাবাসী আমাদের ১০টি ওয়ার্ডে বিজয়ী করবেন।’’ৃতৃণমূলের এগরা পুরভোটে দলের আহ্বায়ক ও বিধায়ক সমরেশ দাসের দাবি, ‘ৃ১৩ টি ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়ে এগরা পুরবোর্ডের দখল নেব।’’ একটি ওয়ার্ডে তাঁর দল হারছে, সেটি কোন ওয়ার্ড খোলসা করেননি তিনি।

কংগ্রেস বোর্ড গঠন করতে না পারলেও নির্ণায়ক হবে, জানিয়ে জেলা সাধারণ সম্পাদক মানস কর মহাপাত্র বলেন, ‘‘তৃণমূলের এখন যিনি জেলা শীর্ষনেতা, তিনি এককালে আমাদের দলেও ছিলেন। তাঁকে তো বিচক্ষণ বলেই ভাবতাম। তবে জেলাকে তাঁর বিরোধী শূন্য করার ডাক কতটা অবিবেচনা প্রসূত তা আমরা প্রমাণ করে দেব।’’ এগরা শহর বিজেপি সভাপতি অশোক প্রধান বলেন, ‘‘ভোটের ফলে ৩-৪ টি আসন আমাদের হবেই।’’ তবে অন্যান্য পুর এলাকার মতোই এগরাতেও জোড়াফুলের কাঁটা নির্দল প্রার্থীরা।

একই চিত্র কাঁথি মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরেও তিনতলায় পুরভোটের কন্ট্রোল রুম, স্ট্রং রুম ছাড়াও ভোট গননার ব্যবস্থাও এখানে করা হয়েছে। ১৯টি ওয়ার্ডের ৫১টি বুথের ভোট গণনার জন্য মোট ১৪টি টেবিল পাতা হয়েছে। সোমবার সকাল থেকেই ভূমি সংস্কার দফরের হল ঘরের মধ্যেই গণনাকেন্দ্রে বাঁশ ও তারের জালের বেড়া দিয়ে ঘর তৈরি করা হয়েছে। দুপুর ১২টার মধ্যে বিজয়ীদের জয়ের সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে সোমবার সন্ধ্যা থেকেই কাঁথিতে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে গণনাকেন্দ্র। গণনাকেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত ২ জন ডিএসপি, ৪ জন ইনস্পেক্টর, ৩২জন এসআই ও এএসআই সহ ১৯০ জন পুলিশ ও মহিলা পুলিশ কর্মী থাকছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন