Nandigram Post Poll Violence

ভিন্‌রাজ্যে সরতে পারে নন্দীগ্রামের ভোট পরবর্তী হিংসা মামলা, সুপ্রিম কোর্টের নোটিস পেলেন তৃণমূল নেতারা

জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, সিবিআই প্রথম থেকে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলাটিকে অন্য রাজ্যের আদালতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তারা এ নিয়ে আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৫ ২০:২৮
Share:

নন্দীগ্রামের মামলা অন্য রাজ্যে সরানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে সিবিআই। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

নন্দীগ্রামের ভোট পরবর্তী হিংসা মামলা বাংলা থেকে অন্য রাজ্যে সরিয়ে নিয়ে যেতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আবেদনের প্রেক্ষিতে নন্দীগ্রামের ৪২ জন তৃণমূল নেতার কাছে গেল শীর্ষ আদালতের পাঠানো নোটিস। প্রায় ৯০০ পৃষ্ঠার নোটিসের মূল নির্যাস হল, আগামী এক মাসের মধ্যে তাঁদের হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে, কেন এই মামলা ভিন্‌রাজ্যে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে না। এ নিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হলফনামা জমা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

কী ভাবে এই মামলার মোকাবিলা হবে, তা নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা আবু তাহের জানান, নোটিস পেয়েছেন গত ২৬ নভেম্বর। তিনি বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ মতো আমরা যুক্তি দেব, কেন এই মামলার শুনানি এ রাজ্যের আদালতেই হওয়া উচিত।’’ তাহের আরও বলেন, ‘‘আমরা প্রথম থেকে সিবিআইয়ের তদন্তে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছি। কখনও সপ্তাহে এক দিন করে কলকাতার সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিয়েছি। কখনও নির্দেশ মাফিক হলদিয়ায় হাজির হয়েছি। তার পরেও মামলাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিজেপিশাসিত রাজ্যে স্থানান্তরের জন্য তৎপর সিবিআই। এর বিরুদ্ধে আমরা সর্বশক্তি নিয়ে লড়াই করব।’’ তাঁর অভিযোগ, বিধানসভা ভোটের আগে নন্দীগ্রামের প্রথম সারির তৃণমূল নেতাদের মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে ব্যস্ত রাখতে এই পন্থা নেওয়া হয়েছে। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, সিবিআই প্রথম থেকে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলাটিকে অন্য রাজ্যের আদালতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।

২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর নন্দীগ্রামের বিস্তীর্ণ অংশে অশান্তি হয়। হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। নন্দীগ্রামের চিল্লোগ্রামের বাসিন্দা তথা বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতি খুন হন। তাতে বেশ কয়েক জন তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে নন্দীগ্রাম থানায় অভিযোগ করেন দেবব্রতের স্ত্রী কল্পনা মাইতি। ঘটনাক্রমে ওই মামলার তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। একে একে ৪২ জন তৃণমূল নেতার নাম জড়ায় এই মামলায়। অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন তাহের, শেখ সুফিয়ানের মতো শাসকদলের নেতারা। এঁদের অনেকেই দীর্ঘ দিন ধরে জেল খেটেছেন এবং বর্তমানে জামিনে মুক্ত।

Advertisement

সিবিআইয়ের আবেদন এবং শীর্ষ আদালতের নির্দেশ প্রসঙ্গে নিহত বিজেপি কর্মীর স্ত্রী কল্পনার প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমার স্বামীর মৃত্যুর প্রায় ৫ বছর অতিক্রান্ত। আরও একটা ভোট চলে এল। এখনও দোষীরা বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে! এই মামলা কোথায়, কোন রাজ্যে যাবে আমার জানা নেই। আমি শুধু চাই, স্বামীর খুনিরা শাস্তি পাক।’’ সুপ্রিম নোটিস প্রসঙ্গে নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘যদি এমনটা হয়ে থাকে তা হলে তা সঠিক কাজ। কারণ, নন্দীগ্রামে খুনের মামলার আসামিরা এখনও প্রকাশ্যে ঘুরছেন, প্রশাসনিক আধিকারিকদের ধমকাচ্ছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement