পূর্ব মেদিনীপুরের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পদ থেকে দিবাকর জানাকে সরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা করল দলের রাজ্য নেতৃত্ব। সোমবার কলকাতায় তৃণমূল ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠকে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই ঘোষণা করেন।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক মাস আগেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদলের সময় জেলা পরিষদ সদস্য তথা দলের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক সভাপতি দিবাকর জানাকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক পদে নিয়োগ করা হয়। কিন্তু ব্লকে দিবাকরবাবুর জায়গায় অন্য কাউকে ব্লক সভাপতি পদে আনা হয়নি। এ নিয়ে দলের ব্লক নেতৃত্বের মধ্যে টানাপোড়েন চলছিলই। তবে দলের ব্লক সভাপতির পদ থেকে জেলা সাধারণ সম্পাদক পদে উন্নীত করার পরও দিবাকরবাবু ব্লক সভাপতি হিসেবে গত ৫ এপ্রিল নোনাকুড়ি বাজারে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক তৃণমূল কার্যালয়ে দলের সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে একটি বৈঠক ডাকেন। এ নিয়ে দলেরই একাংশ রাজ্য নেতৃত্বের কাছে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান।
অভিযোগের সপক্ষে ব্লক সভাপতি হিসেবে দিবাকরবাবুর ওই বৈঠক ডাকার চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছিল রাজ্যে নেতৃত্বের কাছে। এরপরই সোমবার রাজ্য নেতৃত্ব দিবাকরবাবুকে ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে ঘোষণা করেন। যদিও এ দিন দিবাকরবাবুর দাবি, ‘‘আমাকে দলীয়ভাবে এখনও জানানো হয়নি। জেলায় দলের সাংগঠনিক রদবদলের সময় আমাকে ব্লক সভাপতি থেকে জেলা সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিল । কিন্তু ব্লক সভাপতির পদে নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তাই জেলা নেতৃত্বের (শুভেন্দু অধিকারীর) নির্দেশ অনুযায়ী দায়িত্ব হস্তান্তরিত না হওয়া পর্যন্ত আমি ব্লক সভাপতি হিসেবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।’’
দলের একটি সুত্র অনুযায়ী, তমলুকের বিধায়ক তথা রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ চলতি বছরেই গোড়ায় দলেরই ব্লক সভাপতি দিবাকরবাবুর নেতৃত্বে তমলুক শহরে প্রকাশ্যে মিছিল করেছিলন এলাকার বেশকিছু তৃণমূল সমর্থক। এই ঘটনা নিয়ে দিবাকরবাবুর বিরুদ্ধে দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন সৌমেনবাবু। সোমবার দিবাকরবাবুকে ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সৌমেনবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘দিবাকরবাবুর বিষয়ে আমি আগেই দলের জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু জেলা নেতৃত্ব কোন ব্যবস্থা নেয়নি। তবে আজ রাজ্য নেতৃত্বের তরফে দিবাকরবাবুকে ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা
জানানো হয়েছে।’’