রক্তের সঙ্কট যুঝতে শিবিরে মন তৃণমূলের

গরম বাড়তেই শুরু হয়েছে রক্তের আকাল। পর্যাপ্ত সংখ্যক রক্তদান শিবির না হওয়াটা যে এর অন্যতম কারণ, তা মানছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। তাই শিবির করার ইচ্ছা থাকলেই ব্লাড ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য প্রচারে নামলেন ঘাটাল মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৭ ০১:১০
Share:

গরম বাড়তেই শুরু হয়েছে রক্তের আকাল। পর্যাপ্ত সংখ্যক রক্তদান শিবির না হওয়াটা যে এর অন্যতম কারণ, তা মানছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। তাই শিবির করার ইচ্ছা থাকলেই ব্লাড ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য প্রচারে নামলেন ঘাটাল মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সুপার কুণাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “ক্লাব রক্তদান শিবির করলেই সহযোগিতা করব। রোগীদের স্বার্থেই এই উদ্যোগ।”

Advertisement

মাঠে নেমেছে শাসকদলও। সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ক্লাবগুলি যাতে আরও বেশি করে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে, তা নিশ্চিত করতে বৈঠকে বসছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। সেখানে আরও বেশি শিবির করার আর্জি জানানো হয়েছে। ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই বলেন, “মে মাসের গোড়া থেকেই নিয়ম করে শিবির শুরু হবে। ঘাটাল ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের জোগান দিতে আমরা তৈরি।”

গত ক’বছরে ঘাটাল বিধানসভা এলাকায় ৫২টি ক্লাব সরকারি অনুদান পেয়েছে। ঘাটালের বেরবাড়ি এলাকার একটি ক্লাবের সদস্য গোপাল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা ক্লাবের বাৎসরিক অনুষ্ঠানে রক্তদান শিবির করি। কিন্তু ঘাটাল ব্লাড ব্যাঙ্কে যাতে রক্তের আকাল না হয় সে জন্য এখনই শিবির করার প্রস্তুতি শুরু করেছি।’’ রাধানগরের একটি ক্লাবের সদস্য শোভন রায়ও স্বীকার করেছেন, ‘‘বিধায়ক নিজে আর্জি জানিয়েছে। নিয়মমাফিক যে ক’টি শিবির হয়, তার বাইরেও শিবির করার চেষ্টা করছি।’’

Advertisement

ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দিলীপ মাঝি জানিয়েছন, ফের বৈঠক হবে। বৈঠকে ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকেও উপস্থিত থাকার জন্য আবেদন জানাবেন তাঁরা। সেখানে আলোচনা হবে কী কী পদক্ষেপ করলে ব্লাড ব্যাঙ্কে চাহিদা অনুযায়ী রক্তের জোগান অব্যহত রাখা যায়— তা নিয়ে।

শুধু ক্লাব নয়, বেসরকারি নার্সিংহোমগুলিও রক্তদানের শিবির করতে উদ্যোগী হয়েছে। স্থানীয় দু’টি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের তরফে প্রদীপ বেরা ও অনুপ চক্রবর্তীরা জানান, মালিক পক্ষ এবং বন্ধুদের নিয়ে রক্তদান শিবির করছেন তাঁরা।

মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে খবর, ঘাটাল ব্লাড ব্যাঙ্কে (শনিবার দুপুর পর্যন্ত) বিভিন্ন গ্রুপের ২৯০ ইউনিট রক্ত রয়েছে। দৈনিক চাহিদা ৩০-৪০ ইউনিট। মহকুমা হাসপাতাল, সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের রোগী ছাড়াও শহরের ৩০টি নার্সিংহোমও এই ব্লাড ব্যাঙ্কের উপর নির্ভরশীল। সঙ্গে রয়েছে, মহকুমার পাঁচটি গ্রামীণ হাসপাতালও। বে সমস্যা হল ঘাটাল ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের পৃথকীকরণ বিভাগ নেই। ফলে রোগীদের ‘হোল ব্লাডই’ দেওয়া হয়। ফলে যে ২৯০ ইউনিট রক্ত এখন রয়েছে তা দিয়ে বড়জোর দিন সাতেক চলবে। গত বছরও ঠিক তেমনই অভিজ্ঞতা হয়েছিল ঘাটাল ব্লাড ব্যাঙ্কে। তাই আগেভাগেই শিবিরের সংখ্যা বাড়িয়েছে ব্লাড ব্যাঙ্ক। গত দু’মাসে প্রায় ৫০টি শিবির হয়েও গিয়েছে। সঙ্কট মেটাতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্যভবন থেকে শিবির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হাসপাতালগুলিকেও রক্তদানের শিবির করার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন