কেশপুর কলেজে খরচ বিতর্ক

তৃণমূলের ছাত্র নেতা পদ হারালেন

কলেজের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে ছাত্র সংসদের বিপুল খরচ নিয়ে শোরগোল পড়েছে কেশপুর কলেজে। সানাউল্লাকে পদ থেকে সরানোর কথা মানছেন কলেজের অধ্যক্ষ দীপক ভুঁইয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৪৫
Share:

কলেজের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে ছাত্র সংসদের বিপুল খরচ নিয়ে শোরগোল পড়েছে কেশপুর কলেজে। এ নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই শেখ সানাউল্লাকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকের পদ সরিয়ে দিলেন কলেজ-কর্তৃপক্ষ। এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি কলেজের নোটিস বোর্ডে ঝুলিয়েও দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

সানাউল্লাকে পদ থেকে সরানোর কথা মানছেন কলেজের অধ্যক্ষ দীপক ভুঁইয়া। তবে খরচ-বিতর্কের সঙ্গে এঁর কোনও যোগ আছে বলে তিনি মানতে চাননি। দীপকবাবুরর দাবি, “এটা কলেজের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। এর সঙ্গে ওই অনুষ্ঠানের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ অধ্যক্ষের যুক্তি, সানাউল্লা এ বার তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিয়ে দিয়েছেন। তাই আর তিনি ছাত্র সংসদের ওই পদে থাকতে পারে না।

যদিও পাল্টা যুক্তি খাড়া করছেন সানাউল্লা। ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, “তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিয়েছি ঠিকই। তবে আমি খাতায়-কলমে ৩০ জুন পর্যন্ত আমি কলেজের ছাত্র থাকব। তার আগে এ ভাবে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে আমাকে সরানো যায় না।” এই ছাত্র নেতার সংযোজন, “তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা তো শুধু আমি দিইনি, জেলার আরও কয়েকটি কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকরাও দিয়েছেন। সেই সব কলেজ তো এমন নোটিস দেয়নি।”

Advertisement

কেশপুর কলেজের এক শিক্ষক মানছেন, “শুধু তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা দেওয়াটা সানাউল্লাকে সরানোর কারণ নয়। প্রতিষ্ঠা দিবস উদ্‌যাপনে একদিনের অনুষ্ঠানে বিপুল খরচ নিয়ে যে বিতর্ক হচ্ছে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পিছনে সেটাও একটা কারণ।” ইতিমধ্যে সানাউল্লা বিষয়টি টিএমসিপি-র জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। টিএমসিপি-র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভানেত্রী দেবলীনা নন্দী বলেন, “কেশপুর কলেজের ওই নোটিসের কথা শুনেছি। ছাত্র সংসদের নতুন সাধারণ সম্পাদক কে হবেন তা নিয়ে সাংগঠনিকস্তরে আলোচনা হবে।” টিএমসিপি-র এক সূত্রে খবর, শীঘ্রই কেশপুর কলেজের ছাত্র সংসদের সদস্যদের নিয়ে এক বৈঠক ডেকে এ ব্যাপারে আলোচনা হবে।

রাজ্যে পালাবদলের আগে পর্যন্ত কেশপুর কলেজের প্রতিষ্ঠা দিবস উদ্‌যাপন হত কলেজ-কর্তৃপক্ষের উদ্যোগেই। পালাবদলের পরে ছবিটা বদলাতে শুরু করে। প্রতিষ্ঠা দিবস উদ্‌যাপনের রাশ নিতে শুরু করে টিএমসিপি-র ছাত্র সংসদ। এ বছর ২৩ মার্চ কেশপুর কলেজের প্রতিষ্ঠা দিবসের গোটা অনুষ্ঠানেরই আয়োজন করেছিল ছাত্র সংসদ। এক দিনের সেই অনুষ্ঠানেই খরচ হয়েছে ৩ লক্ষ ২০ হাজার টাকা।

অথচ গত বছর যখন কলেজ কর্তৃপক্ষ এই অনুষ্ঠান করেছিলেন, তখন খরচ হয়েছিল ১ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা। ফলে, এ বার বিপুল খরচ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সম্প্রতি কলেজ পরিচালন সমিতির বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আর তারপরই ছাত্র সংসদের ওই নেতাকে পদ থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলেজ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন