তাণ্ডব: সরকারি বাসে ভাঙচুর বন্ধ সমর্থকদের। খ়ড়্গপুরের ইন্দায়
দে ছুট। দে ছুট।
বুধবার বিজেপি-র ডাকা বাংলা বন্ধে তাড়া খেয়ে মেদিনীপুরে কখনও ছুটলেন তৃণমূল কর্মীরা। কখনও আবার বন্ধ সমর্থনকারীরা। খোদ পুরপ্রধান প্রণব বসুর বাড়ির সামনে বিজেপি-র মিছিল আসতে দেখে হাতে থাকা ঘাসফুলের ঝান্ডা রাস্তায় ফেলে দিয়েছেন শাসক দলের কর্মীরা। এক তৃণমূল কর্মীকে বলতে শোনা যায়, “মিছিল করতাম না! শুধু ঝান্ডাগুলো লাগাচ্ছিলাম। এখন আর লাগাব না!” এর আগে অবশ্য তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের তাড়ায় গলিপথ দিয়ে পালিয়ে বেঁচেছিলেন বিজেপি কর্মীরা।
শুরুটা হয়েছিল কাকভোরে। সাড়ে ৫টা নাগাদ শহরের কুইকোটার কাছে একটি সরকারি বাসে ভাঙচুর চালায় একদল বিজেপি কর্মী। বাসে আগুন লাগানোর চেষ্টা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। সকাল ৯টা নাগাদ কুইকোটার কাছে পৌঁছয় তৃণমূল। ছিলেন যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি, দলের শহর সভাপতি বিশ্বনাথ পাণ্ডব, স্থানীয় কাউন্সিলর নির্মাল্য চক্রবর্তী প্রমুখ। বিজেপি-র কয়েকজন কর্মী হাতে ঝান্ডা নিয়ে বাইকে করে আবাসের দিক থেকে কুইকোটার দিকে আসছিলেন।
মেদিনীপুরের কালেক্টরেট মোড়ে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে পানের দোকান। বুধবার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ, সৌমেশ্বর মণ্ডল
সেসময় বাইকে সওয়ার শাসক দলের কয়েকজন কর্মী, সমর্থক ধাওয়া করেন। গলিপথ দিয়ে পালিয়ে যান বিজেপি কর্মীরা। ঘটনার খবর পৌঁছয় গেরুয়া- শিবিরের কাছে। এরপর আরও আগ্রাসী হয় বিজেপি। সকাল দশটা নাগাদ দলের জেলা কার্যালয়ের সামনে থেকে বড় মিছিল বেরোয়। মিছিলে শুধু শহরের কর্মীরা নন, শহরতলির বিজেপি কর্মীরাও ছিলেন। প্রায় সকলেই ছিলেন মারমুখী। এলআইসি মোড়, কালেক্টরেটে একের পর এক দোকান বন্ধ করতে করতে মিছিল ঘুরতে থাকে। কালেক্টরেটের দিকে তৃণমূলের একটি বাইক মিছিল আসছিল। গেরুয়া বাহিনীর মেজাজ দেখে সেই মিছিল ইউ টার্ন নেয়। অন্য গলিপথ দিয়ে পালায়। বিজেপির মিছিল এগোয় কেরানিতলার দিকে। এরপরই পুরপ্রধানের বাড়ির সামনের ঘটনা ঘটে।
গোলকুয়াচকের কাছে ফের মিছিল আটকায় পুলিশ। অভিযোগ, ততক্ষণে বেশ কয়েকবার মিছিল থেকে বোমা ফাটানো হয়েছে।
চাঁদড়ায় ফের একদফায় ভাঙচুর করা হয় সরকারি বাস। অভিযোগ, গুড়গুড়িপালে পুলিশের উপর হামলা করেন বন্ধ সমর্থনকারীরা।
গোলমাল পাকানো-সহ একাধিক অভিযোগে এদিন বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জেলা জুড়ে মোট গ্রেফতার করা হয়েছে ৬১ জনকে।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “বিজেপির দুষ্কৃতীরা মানুষকে সন্ত্রস্ত করার চেষ্টা করেছে। ভাঙচুর, বোমাবাজি করেছে। তাণ্ডব করেছে। তাও পারেনি। মানুষ বন্ধের ডাকে সাড়া দেয়নি।” আর বিজেপি-র জেলা সভাপতি শমিত দাশ বলেন, ‘‘তৃণমূল বন্ধ ভাঙার চেষ্টা করেছিল। পুলিশকে সামনে রেখেও চেষ্টা করেছিল। মানুষই বন্ধ সফল করেছেন।’’