digha

রামের পথেই জগন্নাথ, মন্দির-প্রচারে তৃণমূল

আগামী ৩০ এপ্রিল দিঘায় জগন্নাথ ধাম সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের সংস্থা ‘হিডকো’ ধাম নির্মাণের দ্বায়িত্বে ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:১৯
Share:

দিঘার জগন্নাথ মন্দির। —ফাইল চিত্র।

শোভযাত্রা, ট্যাবলো-প্রচার, পুরোহিতদের সংবর্ধনা, জায়েন্ট স্ক্রিনে অনুষ্ঠান দেখানো— জোর তোড়জোড় চলছে তৃণমূলের তরফে। জগন্নাথ ধাম সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রের উদ্বোধনের কর্মযজ্ঞ পৌঁছে দিতে হবে তো আমজনতার কাছে!

ঠিক এমনই সব তোড়জোড় দেখা গিয়েছিল এক বছর আগে গেরুয়া শিবিরে। অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধনের সময়। তাই এখন জেলার বহু বাসিন্দা থেকে বিরোধীদের কটাক্ষ, রাজ্যের সব সমস্যার কথা ভুলে তৃণমূল এখন জগন্নাথ ধামকেই জনসংযোগের হাতিয়ার করছে।

আগামী ৩০ এপ্রিল দিঘায় জগন্নাথ ধাম সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের সংস্থা ‘হিডকো’ ধাম নির্মাণের দ্বায়িত্বে ছিল। উদ্বোধনের অনুষ্ঠানও হচ্ছে সরকারিভাবে। রাজ্য সরকারের অর্থে এমন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা যায় কি না, এ নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যখন সরব, তখন জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব ব্যস্ত ওই মন্দিরের উদ্বোধন নিয়ে প্রচারে। ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে মিছিল করছেন জেলা তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। জগন্নাথ ধাম উদ্বোধনের আগের ও উদ্বোধনের দিন তৃণমূলের উদ্যোগে জেলা জুড়ে শোভযাত্রা, ট্যাবলো প্রচার, ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রসাদ বিতরণ, পুরোহিতদের সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। জগন্নাথ ধাম উদ্বোধন অনুষ্ঠান বড় পর্দার মাধ্যমে দেখানোর কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এ জন্য জেলার প্রতিটি ব্লকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

জেলার ২৫টি ব্লক এবং সব পুরসভা এলাকাতেই এমন সব কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। তমলুক শহর তৃণমূল সভাপতি চঞ্চল খাঁড়া বলেন, ‘‘৩০ এপ্রিল বিধায়ক কার্যালয়ের সামনের মাঠে যজ্ঞ হবে। প্রায় দু’হাজার জনকে প্রসাদ খাওয়ানোর ব্যবস্থা হয়েছে।’’ কোলাঘাট ও পাঁশকুড়া ব্লক অফিসেই বড় পর্দার মাধ্যমে জগন্নাথ ধামের উদ্বোধন দেখানো হবে। ধাম নির্মাণের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে পাঁশকুড়া ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েতে তৃণমূলের তরফে টোটোয় করে প্রচার চালানো হচ্ছে। তৃণমূলের কিসান খেত মজুর সেলের উদ্যোগে ২৯ এপ্রিল কোলাঘাটের বৃন্দাবনচকে যজ্ঞ ও ধর্মীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছর ২২ জানুয়ারি অয্যোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওই অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে জনসংযোগ বাড়াতে দেশ জুড়ে প্রচার চালিয়েছিল কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি। এ জন্য নেওয়া হয়েছিল বিভিন্ন ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচি। বাড়িতে বাড়িতে প্রচার। এখন একই ভাবে মাঠে তৃণমূল। যা কার্যত গেরুয়া শিবিরের অনুকরণ বলে অভিমত রাজনৈতিক মহলের। এ ব্যাপারে বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তৃণমূলের সরকার নানা দুর্নীতিতে বিদ্ধ। ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী চাকরিহারা। ওয়াকফ আন্দোলেনের নামে মুর্শিদাবাদের দু’জন খুন হয়েছেন। ওই সব থেকে রাজ্যবাসীর নজর ঘোরাতেই জগন্নাথ ধাম উনিয়ে তৃণমূল অতিরিক্ত মাতামাতি করছে।’’

যদিও তৃণমূলের জেলা (তমলুক) সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মাতামাতির অভিযোগ ভিত্তিহীন। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি করে জীবন দুর্বিসহ করেছে। ধৰ্মীয় উন্মাদনা ছড়িয়ে চলেছে। তাই বিজেপির মুখে এমন অভিযোগ শোভা পায় না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন